• নিশাত তাসমিন টুম্পা
কবিগুরুর বর্ণনায়,
এমন দিনে তারে বলা যায়
এমন ঘনঘোর বরিষায়!
এমন দিনে মন খোলা যায়–
এমন মেঘস্বরে বাদল-ঝরোঝরে
তপনহীন ঘন তমসায়॥
এ বছর আষাঢ় আসার আগেই বর্ষা এসে গেছে। গ্রীষ্মের তাপদাহ যেমন ছিল তেমনি ছিল বর্ষার ঘনঘটাও। কথা ছিল বর্ষা মুষলধারে ঝরে আষাঢ়ের আগমনি বার্তা নিয়ে আসবে আজ। আষাঢ়ের প্রথম দিনে রিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টি নামবে ধরণী জুড়ে। শান্ত করবে ধরণীতল। কিন্তু আজকের আকাশ দেখে তা মনে হল না। তাতে কি!
বর্ষা এলে প্রকৃতিতে যেমন আলোড়ন সৃষ্টি হয় তেমনি মানুষের হৃদয়ও বেজে ওঠে। বর্ষা মানুষের মনটাকে উদাস করে, প্রকৃতির মাঝে ঝমঝম বৃষ্টিতে সবকিছু হয়ে আসে ঝাপসা-অস্পষ্ট। বর্ষা যেমন হৃদয়কে আন্দোলিত করে তেমনি সামাজিক, পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনকেও প্রভাবিত করে প্রবলভাবে।
কলকল শব্দে সে পাড় ভাঙ্গে সকল বাঁধা বিপত্তি দূরে সরিয়ে দিয়ে সাগরের সাথে মিলন ঘটানোর জন্য সে ছুটে চলে স্বপ্ন নিয়ে। বৃষ্টির টিপটিপ শব্দ কিছু দুরন্ত ছেলে মেয়েদের মন কেড়ে নেয়। তারা তখর চলে যায় নদীর বুকে খেলা করতে। নদীতে ঝাঁপ দিয়ে বর্ষাকে আলিঙ্গন জানায়। আসলেই বর্ষাকাল একটি চমৎকার ঋতু। এক পশলা বৃষ্টি মানুষের অনুভূতি পাল্টে দিয়ে যায়।
আষাঢ়ের প্রথম দিবসে বিরহীর মনেও দূরাগত এক আকাঙ্ক্ষার প্রেরণা জাগায় বর্ষা। আষাঢ় মাসে কদম ফুল যখন ফোটে তখন চারিদিকে কদম ফুলের তীব্র ঘ্রাণ মনে করিয়ে দেয় বর্ষার কথা। কোন এক পড়ন্ত বিকালে এমন ফুলের গন্ধ ছড়ানো সময় যদি বর্ষা এসে হাজির হয় তাহলে তো বর্ষা প্রেমী মানুষগুলো এর কিছুতেই ঘরে থাকতে চাইবে না। ছুটে চলে যাবে বর্ষার বুকে নিজেকে ভিজিয়ে নিতে। কি অপরূপ মনোরম দৃশ্য!!
ভাবতেই মনে অনেক দোলা দেয়। বর্ষা তুমি এভাবেই মানুষের মনে সবসময় তোমার জন্য প্রেম জাগিয়ে রেখো।আর তোমার এই পানি দিয়ে মানুষের জীবনের দুঃখ কষ্ট গুলো সব ধুয়ে মুছে নিতে পারলে নিয়ে যেয়েও।
লেখক: শিক্ষার্থী।