ট্যাঙ্কার দূর্ঘটনার পর সুন্দরবনে শ্যালা নদীর পানিতে ছড়িয়ে পড়া তেলের মাত্রা আগের চেয়ে গত দু-তিন দিনে অনেকটা কমেছে।
আর এ তেল সংগ্রহে জেলে এবং স্থানীয় নারী-পুরুষের প্রাণপন চেষ্টা করছে।
বনের গাছপালা, লতাপাতা ও মাটিতে লেগে থাকা তেল অপসারণ ও সংগ্রহের জন্য কাজ করছে বনবিভাগ নিযোজিত কর্মীরা। এছাড়া তেল অপসারণে পাম্প মেশিন ব্যাবহার করে পানি ছেটান হচ্ছে বলে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানিয়েছেন সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আমীর হোসেন চৌধরী।
তিনি বলেন, প্রতিদিন দু’বার করে জোয়ার-ভাটার কারনে সুন্দরবনের নদী-খালের পানি সর্বদা চলাচল করে। তেল উত্তলনের পাশাপাশি এ কারনেও পানিতে তেলেও পরিমান কমে আসছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে তিনি আরো বলেন, এখন শ্যালা নদীর পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ এখন আগের চেয়ে অনেকটা ভালো। দুর্ঘটনার পর পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ ছিল ৫ পয়েন্ট, সোমবার সেখানে পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ ৭ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে।
আর সেই তেল উত্তোলনে দুপুর থেকে পাম্পও মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। পাম্প মেশিন দিয়ে পানি ছিটিয়ে তা পুনরায় সংগ্রহ করা হচ্ছে। নদী-খালের ভিতর এখন জেলে ও স্থানীয়রা ব্যস্ত সময় কাটছে তেল সংগ্রহে।
বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম কর্পোরেশন ও পদ্মা অয়েল কম্পানির নিয়োজিত ঠিকাদার মো. রফিকুল ইসলাম বাবুল বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানিয়েছেন, বুধবার তারা স্থানীয়দের কাছ থেকে ৪ হাজার ৬০০ লিটার তেল কিনেছেন। এনিয়ে তেল সংগ্রহ শুরু হবার পর থেকে এ পর্যন্ত তারা মোট ৬০ হাজার ৪০০ লিটার তেল সংগ্রহ করেছে।
তবে ‘ওটি সাউর্দান স্টার-৭’ দূর্ঘটনায় পূর্ব সুন্দরবন জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ লিটার ফার্সেস অয়েল।
বনের বিভিন্ন এলাকায় তেল আহরণে নিয়োজিতরা জানিয়েছে, নদীর পানিতে এখন আর তেমন একটা তেল নেই। নদী-খালের দুই পাড়ের গাছপালা ও মাটিতে এখন সবচেয়ে বেশি তেলের আস্তরন রয়েছে।
এদিকে সোমবার সন্ধায় মংলার স্থানীয় এক সংবাদকর্মী পূর্ব সুন্দরবন ঘুরে এসে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেছেন, চাঁদপাই রেঞ্জের মৃগামারী খালের পাড়ে একটি কুমিরকে রোদ পোহাতে দেখা গেছে। দূর থেকে ট্রলারের শব্দ শোনামাত্র কুমিরটি শ্যালা নদী সংলগ্ন মৃগমারী খালে পানিতে ঝাপ দেয়। ট্যাঙ্কর ডুবির পর গত কয়েক দিনে এমটি দেখা যায় নি।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ভোরে সুন্দরবনে শ্যালা নদীতে যাত্রাবিরতিকালে ‘ওটি সাউদার্ন স্টার-৭’ নামে তেলবাহী ট্যাঙ্কারে ধাক্কা দেয় এমটি টোটাল নামে অপর একটি ট্যাঙ্কার। এতে ট্যাঙ্কারটির এক পাশ ফেটে ডুবে যায় এবং তেল ছড়িয়ে পড়ে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে।
এ দূঘটনায় সুন্দরবনের প্রাণী ও জীববৈচিত্র মারাত্মক ভাবে হুমকিতে পড়ার আসঙ্কা করছে পরিবেশবীদ ও বনবিভাগের কর্মকর্তারা।