টানা অবরোধে মারাত্মক ধসের মুখে পড়েছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মৎস্য আড়ৎ (বিক্রয় কেন্দ্র) গুলোর কেনাবেচায়। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন মৎস্য চাষী ও ব্যবসায়ীরা।
এই অঞ্চলের সাদা মাছের সবচেয়ে বড় বিক্রয় কেন্দ্র বাগেরহাট সদর উপজেলার বারাকপুর এবং জেলার ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা মৎস্য আড়ৎ ঘুরে জানা গেছে এমন তথ্য।
এখানকার ব্যবসায়ী ও চাষীদের সাথে কথা বলে জান গেছে, সাভাবিক ভাবে প্রতিদিন কমপক্ষে দুইশ টন মাছ কেনাবেচা হয়ে থাকে এখানে। এই আড়ৎ দুটি থেকে মাছ সরবরাহ করা হয় ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেট ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মোকামে।
তবে অবরোধের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি ও পরিবহণ সংকটের কারনে অনেক ব্যবসায়ী মাছ সরবরাহ করতে পরছেন না দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এতে কমে গেছে মাছের দাম। ফলে মাছ চাষের সাথে জড়িত চাষী ও ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির মূখে পড়তে হচ্ছে।
ফলতিতা মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী শাহ্ জালাল বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, চট্টগ্রাম ও ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে মাছ সরবরাহ করি। কিন্তু অবরোধের কারনে নিয়মিত পরিবহণ না চলায় মাছ বাইরে পাঠানো যাচ্ছে না। রাজনৈতিক দলগুলো হরতাল অবরোধ দিলেই আমাদের দারুন সমস্যায় পড়তে হয়।
তাই আড়ৎ গুলোতে অস্বাভাবিকহারে কমে গেছে মাছের আমদানি।
বারাকপুর আড়তের মাছ বিক্রি করতে আসা চাষী আল মামুন জানান, ধর দেনা করে মাছ চাষ করেছিলাম। মাছের দাম অনেক কমে গেছে। তাই বিক্রি করে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
তিনি প্রশ্ন রাখেন এভাবে অবরোধ চলতে থাকলে আমারা বাঁচব কিভাবে?
সুন্দরবন মৎস্য আড়ৎ এর সত্ত্বাধিকারী এবং বারাকপুর মৎস্য আড়ৎ সমিতির সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, টানা অবরোধের কারনে বাইরের ব্যবসায়ীরা এখানে আসতে পারছেন না। চাষীরাও মাছের নায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এইভাবে অবরোধ চলতে থাকলে লক্ষাধিক চাষী ও ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির মূখে পড়বে।
বারাকপুর মৎস্য আড়ৎ সমিতির সভাপতি সৈয়দ জাকির হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, বারাকপুর মৎস্য আড়তে সাধারণত প্রতিদিন অন্তত্য এক থেকে দেড় কোটি টাকার সাদা মাছের কেনাবেচা হতো। কিন্তু বিএনপি’র অবরোধ শুরু হওয়ার পর তা ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকায় নেমে এসেছে।
সব মিলিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় মাছের এই আড়ৎ দুটিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তাই মাছ চাষ ও ব্যবসার সাথে জড়িতদের রক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের এই ধরনের কর্মসূচি থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।