বাগেরহাটের রামপালে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে অর্থায়ন করতে তিনটি ফরাসি ব্যাংক এর অস্বীকৃতি জানানোর ঘটনা প্রকল্পটি সম্পর্কে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি ভুল বার্তা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কায় রামপাল প্রকল্পের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভেতরে বড় ধরণের ভিন্নমত রয়েছে এবং এর বিরোধীতাকারীরা ফরাসি ব্যাংকগুলোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ আর ভারতের যৌথ মালিকানায় বাগেরহাটের রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের ঘোষণার পরপরই তা বিরোধীতার মুখে পড়ে।
পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন ও বিশেষজ্ঞরা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন না করার জন্যে সরকারের কাছে দাবি জানায় এই উদ্বেগে যে সুন্দরবনের খুব কাছে এটির অবস্থান হওয়ার কারণে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এই ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের ক্ষতি করবে।
এই প্রকল্পের ব্যাপারে এখন অবশ্য একটি বড় ধাক্কা এসেছে ফ্রান্সের তিনটি বড় ব্যাংক থেকে। ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ান জানাচ্ছে যে রামপাল প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে না বলে ব্যাংক তিনটি জানিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলছেন, যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বানাতে আগ্রহী এমন ২০টি কোম্পানি এরই মধ্যে প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখেছে।
বিবিসিকে তিনি আরো বলেন যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অর্থ সংগ্রহের কোন চেষ্টা করা হচ্ছে না।
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিতে ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ত্রিশ শতাংশ অর্থ সমানভাবে আসবে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও ভারতের ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কর্পোরেশনের কাছ থেকে। বাকী ৭০ শতাংশ অর্থ যোগাড় করবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি যারা বানাবে, সেই কোম্পানি।
রামপাল প্রকল্পের বিপক্ষে যাদের অবস্থান, তাদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বা বেলা। এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলছেন, তাদের দীর্ঘদিনের ক্যাম্পেইন কাজ দিচ্ছে বলে তাঁরা মনে করছেন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ যদিও আশা করছেন যে রামপাল প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়ন পেতে শেষ পর্যন্ত কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু তিনি এও মনে করেন যে ফরাসি তিনটি ব্যাংকের সিদ্ধান্ত প্রকল্পের ব্যাপারে একটি ভুল বার্তা দিতে পারে ।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলছেন, এর আগে নরওয়েজিয়ান পেনশন ফান্ডের পক্ষ থেকে রামপালের প্রকল্পের ভারতীয় অংশীদারকে অর্থায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এখন তিনটি ফরাসী ব্যাংকের পর সম্মানজনক কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে না বলে তিনি আশা করেন।