‘ছবি তুইল্যা কি হবে? কতজনে তো ছবি তুলিছে। কয় বছর হইলো, রাস্তা হইলো না। ছবি তুইল্যা কাম হবে নারে.. ভাই।’
খানাখন্দ আর ছোট বড় অজস্র গর্তে ভারা বাগেরহাটের সাইনবোর্ড-বগী ভায়া মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা আঞ্চলিক মহাসড়কের সড়কের ছবি তুলতে দেখে বিদ্রুপের স্বরে এমন মন্তব্য ভ্যান চালক সিরাজুল আকনের।
সিড়র ও আইলার পর থেকেই বেহার দশা সাইনবোর্ড বগি সড়কের। সড়কটি পূণঃনির্মানের কাজ শুরু হয়েছে প্রায় চার বছর। কিন্তু বছরের পর বছর পেরুলেও প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে আঞ্চলিক মহাসড়কের পুণ:নির্মাণ প্রকল্পটি শেষ হয় নি।
বেহাল সড়কের মোরেলগঞ্জ বেইলী ব্রিজ এলাকায় শনিবার বিকালে গভীর গর্তে আটকে যাওয়া কয়েকটি পরিবহন (বাস)। রোববার (১৬ আগস্ট) দিনভর চেষ্টা করেও বাসগুলো টেনে তোলা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, রোববার দুপুর থেকে এই সড়কে সকল প্রকার বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি।
মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা-মংলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি শামীম আহসান পলাশ জানান, সড়কে আটক থাকা গাড়িগুলো তুলে গর্ত ভরাট না হওয়া পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিদিনই সড়কের অসংখ্য ছোট-বড় গর্তে পড়ে বসে যায় কোন না কোন বাস। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান যাত্রীরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, সাইনবোর্ড-বগি আঞ্চলিক মহাসড়কে এমন চিত্র প্রতিদিনকার। বিশেষ করে সাইনবোর্ড থেকে মোরেলগঞ্জ পর্যন্ত। ২৫ কিলোমিটার সড়ক যেন কেবলই মরণ ফাঁদ। প্রতিদিন ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। তবু ঝুকি নিয়ে চলছে পণ্য ও যাত্রীবাহী কয়েক শত যানবাহন।
মোরেলগঞ্জ এসএম কলেজের ভূগোনের সহকারী অধ্যাপক হায়দার আলী জানান, অর্ধযুগেরও বেশি সময় ধরে মারাত্মক ভাঙাচোরা দশা সাইনবোর্ড বগি সড়কের। এ পথে প্রতিদিন খুলনা থেকে এসে কলেজ করতে হয়। চলতি বর্ষা মৌসুমে মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলাবাসির চলাচলের একমাত্র সড়কটি এখন একে বারেই যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
মোরেলগঞ্জের স্থানীয় সংবাদিক মশিউর রহমান মাসুম জানান, খানা-খন্দে ভরা সড়কের বেস কিছু এলাকা পার হতে বাসগুলো যাত্রীদের নামিয়ে দেন। সড়কের অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পর হয়ে আবারও গন্তব্যের উদ্যেশে যাত্রা করে বাস। তবু সড়কের সাথে যুদ্ধের যাত্রা প্রতি মূহুর্তেই অনিশ্চিত।
ভুক্তভোগীদের দাবি, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাজ ফেলে রাখায় এবং নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) উদাসীনতায় কারণে পরিস্থিতি এমন মারাত্মক পর্যায়ে গেছে।
বাগেরহাট সওজ’র উপ-সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ‘সড়কের বেহাল দশার কারণে মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে আরও কিছু দিনের জন্য এই পরিস্থিতি থাকবে।’
নতুন ঠিকাদার বুধবার (১৯ আগস্ট) থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কাজ শুরু করেছে। আগামী বছরের (২০১৬ সালের) জুন মাসের মধ্যে সড়কটির এই অংশের নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদ তার।