সুন্দরবনের পাশে মংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে প্রায় ৫শ’ ১০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ডুবে যাওয়া কার্গো এমভি জি আর রাজ তিন দিনেও উদ্ধার হয়নি কার্গো।
শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত কয়লাবাহী কার্গো উদ্ধারে কোন প্রকার কার্যক্রম শুরু হয় নি।
মংলা থানর জয়মনির ঘোল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) নজরুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জাননা, উদ্ধার তৎপরতা শুরু না হওয়ায় কয়লা বোঝাই কার্গো জাহাজটি পুরোপুরি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী প্রিন্স জানান, ডুবে যাওয়া কয়লাবাহী কার্গো জাহাজটি উদ্ধারের প্রস্তুতি চলছে। তবে কখন নাগাদ উদ্ধার কাজ শুরু হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেন তিনি।
এদিকে পশুর চ্যানেলে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে একটি খালি ড্রাম দিয়ে দুর্ঘটনাস্থল চিহ্নিত করেছে মংলা বন্দর কর্র্তৃপক্ষ।
ডুবে যাওয়া কার্গো মালিক মো. দিল খান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ডুবন্ত কার্গোটি উদ্ধারে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঢাকাস্থ ‘ভাই ভাই স্যালভেজ’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান।
।। কয়লাবাহী কার্গোডুবি: উদ্ধারে তৎপরতা নেই, তদন্ত-মামলায় বন বিভাগ
এদিকে বন বিভাগ ও স্থানীয় একটি সূত্র বলছে, কার্গো জাহাটি উদ্ধারে মালিক পক্ষের ভাড় কারা ভাই ভাই স্যালভেজ নামক প্রতিষ্ঠানটি কেবল ডুবন্ত কার্গোটি উত্তোলন করা যাবে কি না এ ব্যাপারে অনুসন্ধান করছে।
জোয়ারে পশুর নদীতে পানি ও স্রতের চাপ না কমা পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা যাবেনা বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক নাইম হোসেন ও ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান। তবে তাদের বরাত দিয়ে ওই সূত্রটি বলছে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হবে।
তবে মংলা বন্দরের একটি সূত্র বলেছে, অবস্থান এবং গভীরতার কারনে মংলা পশুর নদীর ওই স্থান থেকে জাহাজটি উদ্ধার করা কঠিন হবে।
মঙ্গলবার রাতে মংলা সাইলো (খাদ্য গুদাম) সংলগ্ন জয়মনির ঘোলের বিউটি মার্কেট এলাকায় পশুর নদীতে কয়লাবাহী কার্গোটি ডুবে যায়। এর আগে ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীতে ফার্নেস তেলবাহী ট্যাঙ্কার ‘সাউদার্ণ স্টার ৭’ ও চলতি বছরের ৫ মে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের ভোলা নদীতে সার বোঝাই ‘এমভি জাবালে নুর’ ডুবে যায়।
সুন্দরবনের ক্ষতির আশঙ্কা –
সুন্দরবনে একের পর এক কার্গো, ট্যাঙ্কারসহ জাহাজ ডুবির ঘটনায় বন ও জলজ প্রাণীর অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে বলে ধারণা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে পরিবেশবিদরা বলছেন, সুন্দরবনের নদ-নদীর মধ্যে দিয়ে নিয়ম না মেনে নৌ-যান চলাচল করার কারণেই একের পর এক এধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। বিষয়টিকে সরকারের উদাসিনাত বলেও অভিযোগ তাদের।
সেভ দ্যা সুন্দরবন চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন,‘কয়লাবাহী জাহাজ ডুবি আমাদের জন্য একটা সর্তক বার্তা। রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে দিনরাত ২৪ ঘন্টা সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে কয়লাবাহী জাহাজ চলাবে। এর ফলে কয়লা, তেল-মবিল ও বর্জ্য পড়বে, হর্ণের শব্দ, রাতে সার্চ লাইটের আলো প্রাণীকুলের অভয়ারন্য নষ্ট করবে।’
পরিবেশবিদ অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন,’পানিতে এই ধরনের রাসায়নিক পদার্থগুলো মিশে এক ধরনের বিষক্রিয়া তৈরি করবে। যার ফলে সেখানে যে জলজ প্রাণীরা আছে তারা স্বাভাবিকভাবে সেখানে থাকতে পারবে না।’
তবে, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেনের দাবি ‘কয়লা পানি ও বৃরাজির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।’