কালবৈশাখী ঝড়ে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিদ্যুৎ বন্ধের ৩০ ঘন্টা পরও অন্ধকারে বাগেরহাটের অধিকাংশ এলাকা।
ঝড়ের প্রায় ২৪ ঘন্টা পর শহরের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ এলেও বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) রাত ২টা পর্যন্ত জেলার অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যবস্থাপক মো. মোতাহার হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাতের আকষ্মিক কালবৈশাখী ঝড়ে বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন ৭টি সাব-স্টেশন ও ২৮টি ফিডারের সবগুলোর বিতরণ লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঝড়ে বৈদ্যুতের তারের ওপর বড় বড় গাছপালা পড়ায় রাত থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
মঙ্গলবার রাত থেকে চেষ্টা করে এখন পর্যন্ত কেবল ৬টি সাব স্টেশন ও ৮টি ফিডারে বিদ্যুৎ লাইন দেওয়া গেছে। তবে গ্রাহক পর্যায়ে প্রায় চার হাজার কিলোমিটার বিতরণ লাইন ও গ্রাহকের সংযোগ ঠিক করতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।
বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শফিকুল ইসলাম নোবেল বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, বৃহস্পতিবার ইংরেজী প্রথম পত্র পরীক্ষা। কিন্তু ঝড়ের পর গতরাত থেকে ভ্যাপসা গরম ও বিদ্যুৎ না থাকায় খুব কষ্ট পেতে হচ্ছে। ঝড়ে গাছ পড়ে ঘরের চাল নষ্ট হয়েছে। পরীক্ষার প্রস্তুতিও ঠিক ভাবে নিতে পারছিনা।
বাগেরহাট পৌরসভার খারদ্বার এলাকার বাসিন্দা লুনা আক্তার বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সরবরাহও বন্ধ রয়েছে। নষ্ট হতে শুরু করেছে ফ্রিজে থাকা মাছ-মাংসসহ কাঁচা তরকারি।
বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও অটোরিকশা চলাচলও সিমিত ছিল এদিন।
পৌর এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠান ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ পাল বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, গাছপালা সরিয়ে শহরের বেশির ভাগ লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয়েছে। তবে অনেক এলাকায় সার্ভিস তার বিচ্ছিন্ন থাকায় বিদ্যুৎ পাচ্ছেনা গ্রাহকরা।
তবে বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিদ্যুৎ শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা তার।
এদিকে রাতে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন চালুর পর সর্টসার্কিটের ফলে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে বিচ্ছিন্ন এসব ঘটনায় তেমন বড় কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিন তিতাস।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম জানান, ঝড়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে কাঁচা ও আধা পাকা বসতঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে ও ভেঙে গেছে অসংখ্য গাছপালা। ধান, পান, কলাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে জেলা প্রশাসন কাজ করছে।