দেশে বাঘের সংখ্যা নির্ণয়ে চলমান পদ্ধতি পরিবর্তন করে নতুন পদ্ধতি প্রবর্তনের অংশ হিসেবে গোপন ক্যামেরা ব্যবহার করে বাঘশুমারির একটি পাইলট প্রকল্প চালু করতে যাচ্ছে বনবিভাগ।
চলমান পদ্ধতিতে বাঘের পায়ের ছাপ গণনা করে (পাগমার্ক) বাঘশুমারি করা হয়। আর নতুন পদ্ধতিতে (ক্যামেরা ট্রাপিং) ক্যামেরার চোখেই ধরা পরবে বাঘের সংখ্যা।
পায়ের ছাপ ধরে বাঘের সঠিক সংখ্যা গণনা করাটা অনেক কঠিন বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বাঘ বিশেষজ্ঞ মনিরুল এইচ খান। তিনি বলেন, “বলা হয়ে থাকে প্রতিটি বাঘের পায়ের ছাপ আলাদা। কিন্তু এটার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। আর বাঘ সবসময় একই রকম মাটির উপর দিয়ে একই মুডে হাঁটে না।”
সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময়ের জন্য বন বিভাগ একটি অ্যাকশন প্ল্যান (কর্মপরিকল্পনা) তৈরি করেছে। ড. মনিরুলও এই প্রকল্পের সদস্য।
২০০৪ সালে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও ভারতের বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় পায়ের ছাপের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত জরিপে ছয় হাজার বর্গকিলোমিটারের সুন্দরবনে ৪৪০টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার গণনা করা হয়। এর মধ্যে ১২১টি পুরুষ, ২৯৮টি বাঘিনী এবং ২১টি শিশু বাঘ।
তবে প্রকৃতপক্ষে বাঘের সংখ্যা আরো কম হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক মনিরুল। তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত উদ্যোগে ২০০৬ সালে ক্যামেরা ট্র্যাপিং ও আপেক্ষিক সংখ্যা পদ্ধতি অনুসরণ করে সুন্দরবনে আমি একটি শুমারি করি। এই পদ্ধতিতে বাঘ পাওয়া গেছে ২০০টি৷” ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতি সুন্দরবনে বাঘের সঠিক সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করবে- এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অফ বাংলাদেশের (ডব্লিউটিবি) প্রধান নির্বাহী আনোয়ারুল ইসলাম।
তপন কুমার দে বলেন, প্রাথমিকভাবে সুন্দরবনের যে অঞ্চলগুলোতে বাঘের আনাগোনা বেশি সেরকম কয়েকটি পয়েন্টে মোট ৬০টি ক্যামেরা বসানো করা হবে। প্রতি দুই কিলোমিটার পরপর প্রত্যেকটা পয়েন্টে থাকবে দুটি করে ক্যামেরা।
বাঘের প্রকৃত সংখ্যা জানতে পারলে বাঘ রক্ষায় আরো কারযকর পদক্ষেপ নেয়া যাবে বলেও মনে করেন তিনি।
তথ্য সুত্র: ইন্টারনেট।