ইনজামামুল হক | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
১৯৫৯ সাল। মুক্তিযুদ্ধেরও একযুগ আগে। জেলা বাগেরহাটের জন্ম হয়নি তখনও। বাগেরহাট তখন একটি মাহকুমা। পূর্ব পাকিস্তানের অধিনে খুলনা জেলার অন্তর্গত।
সেই সময়ে বাগেরহাট শহরে তখন ছিল না কোনো পিচ ঢালা রাস্তা, ছিলো না বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। শহরের মেঠ পথে চলতো গরুর গাড়ি। ইটের ভবন (দালান) তো মনে হয় এক, দুই করে গুনে বলা যেত। এখনকার শহরের অনেক অংশেই তখন চাষাবাদ হতো।
সেই সময়ে চাকরি নিয়ে বাগেরহাট এসেছিলেন তরুণ আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৫৯-৬০ সাল। সেই আবুল মাল আব্দুল মুহিত এখন বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী।
পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ। স্বাধীন দেশে অগ্রযাত্রা আর সমৃদ্ধির ধারায় বাংলাদেশ এগিয়েছে অনেকটা। উন্নয়নের পথে এগিয়েছে বাগেরহাটও। অর্থমন্ত্রীর মহাকুমা এখন জেলা বাগেরহাট।
সকালে বাগেরহাটের রামপালে পৌঁছে নির্মাণাধীন তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও মংলা বন্দর পরিদর্শন শেষেই চেনা বাগেরহাটে ছুটে আসেন অর্থমন্ত্রী।
ঘুরে দেখেন পুরোনো কর্মস্থল। তার তৎকালীন বাসবভন। মহকুমা প্রশাসক থাকাকালীন আব্দুল মুহিত যে সরকারি বাড়িতে থাকতেন তা এখন বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের বাসভবন (ডিসির বাংলো)। রোববার দুপুরের খাবার সেরে মন্ত্রী ছুটে যান ডিসির বাংলো-তে। মুহুর্তের জন্য হয়তো হারিয়েও গেছিলেন স্মৃতির আঙিনায়।
যান তার প্রিয় প্রতিষ্ঠান সরকারি পিসি কলেজে। এসডিও থাকাকালীন সমায়ে গেস্ট টিচার (শিক্ষক) হিসাবে কিছুদিন ক্লাসও নিয়েছেন এই কলেজে। পরিদর্শন করেন বাসবাটি নাগের বাড়ি।
অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিলো বহুদিনের পুরোন কর্মস্থল বাগেরহাট। কেমন লাগছে? বর্তমান বাগেরহাট, আগামী দিনের বাগেরহাট কেমন হবে?
সব মাড়িয়ে মন্ত্রীর ভোজন রসিকতা। ‘আজ অনেক দিনপর ভালো মাছ খেলাম এখানে। আগেও বাগেরহাটে খুব ভালো মাছ পাওয়া যেত। এখন কেমন মাছ পাওয়া যায়?’ প্রশ্ন রাখলেন পাশে থাকা স্থানীয় সংসদ সদস্যকে।
বাগেরহাট নিয়ে বলতে গিয়ে শুরুটা করেন গর্বের জায়গা থেকে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে রয়েছে খানজাহান (রহ.) এর মাজার। তিনি একদিকে যেন ছিলেন একজন জেনারেল (শাসক), অন্যদিকে ছিলেন আধ্যাত্মিক ব্যক্তি। ষাটগম্বুজ মসজিদ তো One of the finest mosques in our country. এতো গম্বুজ ওয়ালা সুন্দর মসজিদ আর কোথায় পাওয়া যাবে।’
মন্ত্রী বলেন, বাগেরহাট এগিয়ে যাচ্ছে। এই অঞ্চলে তো এখন বড় বড় প্রজেক্ট হচ্ছে।
‘এটা তো (বাগেরহাট) এখন বিগ আরবান এরিয়া (নগর) হয়ে গেছে।’
‘আমাদের কৃষি নির্ভর অর্থনীতিতেও বাগেরহাট একটা বড় ভূমিকা রাখছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, বন্দর, ইপিজেড ছাড়াও মংলাতে অর্থনৈতিক জোন হচ্ছে। এগুলো সবই আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে’, যোগ করেন মন্ত্রী।
এইচ/এসআই/বিআই/১৬ জানুয়ারি, ২০১৭
** বাগেরহাট অনেক বেশি পর্যটন সম্ভাবনাময়: অর্থমন্ত্রী