স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাট ফিল্ম সোসাইটির ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার (১০ মার্চ) থেকে বাগেরহাট শহরের সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের এসি লাহা মিলনায়তনে এই প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে সোমবার, ১২ মার্চ পর্যন্ত।
পনের বছর পূর্তিতে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ছাড়াও গুণীজন সম্মাননা প্রদান করেছে বাগেরহাট ফিল্ম সোসাইটি। সম্মাননা দেওয়া হয় বাগেরহাটের কৃতি সন্তান নাট্যজন ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সৈয়দ মহিদুল ইসলাম (মরণোত্তর), চলচ্চিত্র নির্মাতা শহীদ রায়হান এবং নারী মুক্তিযোদ্ধা মেহেরুন্নেছা মীরাকে।
অনুষ্ঠানে বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. মীর শওকাত আলী বাদশা প্রধান অতিথি হিসেবে তাদের সম্মাননা স্মারক ও পদক তুলে দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মীর শওকাত আলী বলেন, ফিল্ম সোসাইটি যে সৃষ্টিশীল কাজ করে যাচ্ছে তার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শুধুমাত্র সিনেমা প্রদর্শন করলে হবে না। সেই সাথে এই প্রজন্মকে চলচ্চিত্র নির্মাণে উৎসাহিত করতে হবে। তারা এগুলোর পাশাপাশি জেলার অভিনেতা, নাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও গুণীজনদের সম্মাননা দিচ্ছে। তাদের এ ধরণের উদ্যোগ অব্যাহত থাক এই আশাবাদ জানাই।
বাগেরহাট ফিল্ম সোসাইটি’র সভাপতি জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র নির্মাতা শহীদ রায়হান, সনাক সভাপতি অধ্যাপক চৌধুরী আব্দুর রব, ডা. মোশারেফ হোসেন, ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান, আব্দুল্লাহ বনি প্রমুখ।
জাকির হোসেন বলেন, সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মানের সাথে নতুন প্রজন্মকে শুদ্ধ ও সুস্থ সংস্কৃতির চর্চায় ফিরিয়ে আনতে গেল ১৫ বছর ধরে কাজ করছে ফিল্ম সোসাইটি। চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ছাড়াও গুনীজনদের সম্মাননা, চলচ্চিত্র নির্মাণে বর্তমান প্রজন্মকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।
তিন দিনব্যাপি প্রদর্শনীতে মুক্তিযুদ্ধের উপর নির্মিত বাংলা চলচ্চিত্র গেরিলা, শঙ্খচিল, দুটি হিন্দি চলচ্চিত্র, শিশুদের জন্য এনিমেটেড চলচ্চিত্র এবং চার্লি চ্যাপলিনের চলচ্চিত্র প্রদর্শীত হবে।
উদ্বোধন ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান শেষে বাগেরহাটের ১০ জন ক্ষুদে নির্মাতার তৈরি এক মিনিট দৈর্ঘ্যের ১০টি চলচ্চিত্র দেখানো হয়। শিশুদের নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো আন্দোলিত করে মিলনায়তনে উপস্থিত সকল দর্শক-সিনেমা প্রেমীদের।
তিনি ছিলেন নাট্যশিক্ষক, অভিনেতা ও নির্দেশক। বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলায় ১৯৪৬ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় পড়াশোনার পর সৈয়দ মহিদুল ইসলাম ভারতে চলে যান। সেখানে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।
‘ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠী’ নামে সাড়া জাগানো নাট্যদল ও সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন নাটক লেখা ও নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে অসংখ্য নাটকে অভিনয় ও কণ্ঠ দেন এই শিল্পী।
মঞ্চ, টেলিভিশনেই নয় অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রেও। তার নির্মিত দুটি চলচ্চিত্র ‘আমি কার’ ও ‘স্বপ্ন যাত্রা’।
তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে ঈশ্বর এবং আমি, মানুষ অচেনা অন্ধকার, আয়নার সামনে চড়ুই পাখি, অবশেষে, অভিনয় অন্যতম। এছাড়া মঞ্চ ও টেলিভিশনের জন্য ডজন খানেক নাটক অনুবাদ করেছেন সৈয়দ মহিদুল।
২০০২ সালের ২৩ অগাস্ট মারা যান এই গুণী শিল্পী।
এইচ//এসআই/বিআই/১০ মার্চ, ২০১৮