মোড়েলগঞ্জের ইতিহাস সম্পর্কে অনেকেই হয়ত জ্ঞাত আছেন। সবাই কমবেশি জানি মোড়েলগঞ্জ আবাদ করেছেন কে? কি তার পরিচয়?। আজকের এই লেখাটি মোটেও এই প্রায় শত বছরের পুরনো ঘটনা নিয়ে নয়। আমার আজকের এই লেখাটি শুধু বর্তমানকে নিয়ে। ইংরেজ আমলের প্রায় শত বছর পরের ঘটনা নিয়ে।
কিন্তু কঠিন বাস্তবতা হলো এই যে, আমরা অদ্ভুত(!) বাঙালী দিন দিন শেকড়কে ভুলে যাচ্ছি। তেমনি একটা অঞ্চল হলো বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার আমরা। আমরা ঠিকই জানি মোরেলগঞ্জ ইংরেজ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর এক নাবিক পরিবারের নামেই নামকরন হয়। এই এলাকা আবাদ করে শাসন করতো রবার্ট মোরেল ও হেনরী মোরেল। আমরা এটাও জানি কোথায় তাদের মোরেলকুাঠি।
এতসব জানা স্বত্তেও আমরা কেন জানি মোরেলের এই কুঠি রক্ষা করতে নারাজ। প্রশাসনও এক্ষেত্রে কেন জানি নীরব। মনে হয় আজো আমাদের সাথে মোরেলদের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা চলছে। হয়তো মোরেলদের অত্যাচারের কথা স্মরণ করে আমাদের এই প্রতিহিংসা। কিন্তু আমাদের ইতিহাসকেও তো বাচিয়ে রাখতে হবে। মোরেলকুঠি আজো আছে বলে আমাদের ইতিহাস এখনো ধিকিধিকি করে জ্বলছে। আর স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে অনেক কথা।
যদি এই মোরেলকুঠি না থাকে তবে মোরেলগঞ্জের ইতিহাসও হারিয়ে যাবে কালের গর্ভে। এখনো আমরা কালাচাঁদ আওলিয়াকে মনে রেখেছি কারন প্রতি বছর ওখানে মেলা বসে, তাকে মনে রাখা হয়েছে। সংরক্ষণ করা হয়েছে মাজার। কিন্তু সংরক্ষণ করা হয়না মোরেলকুঠিটি। যদি রক্ষা করা না যায় তাহলে এমন এক সময় আসবে যে মোড়েলগঞ্জ নামকরন কোন পাখি বা নদীর নামে নামকরণ হয়েছে(!) তাই নিয়ে তর্ক বিতর্ক হবে।
আরো মজার ব্যাপার হলো হেরোইন ফেন্সিডিলের রাজ্য খ্যাত কাঠালতলার নিকটে কুঠিটি হওয়ায় স্থানীয় ও কাঠালতলার কিছু মোরেলভক্ত(!) সন্ধার পর গাঁজা ফেন্সিডিলের আসর জমায়। আবার মোরেলকুঠিটি দখল করে আছে মোরেলের প্রজন্ম(!) দাবী করা কিছু সাধু যা অবৈধ বলা যেতে পারে।
এতসব ব্যাপারের পরও কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকায় অবতীর্ণ। ফলে দর্শণার্থী বিমূখ এই এই দর্শনীয় কুঠিটি। আর কোন দর্শনার্থী এলেও ধখলকারীরা তাদের দুর দুর করে তাড়িয়ে দেয়, এমনকি অনেকসময় নেশাখোর দখলকারীরা তাদের প্রতি হামলে পড়ে সর্বস্ব কেড়ে নিতে।
কিন্তু যদি এই দর্শনীয় কুঠিটি সঠিকভাবে রক্ষা করা যেত তবে আজীবন বেচে থাকতো আমাদের ইতিহাস। আর এলাকাটি রূপ নিত পর্যটন কেন্দ্রে। আশাকরি এই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ যথোপযুক্ত ব্যাবস্থা নিবেন।