প্রচ্ছদ / খবর / “লংমার্চ”- উদ্বেগ, উৎকন্ঠা এবং বাগেরহাট

“লংমার্চ”- উদ্বেগ, উৎকন্ঠা এবং বাগেরহাট

সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপালে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলের দাবিতে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির লংমার্চ শনিবার সকালে বাগেরহাট এসে পৌঁছাবে।
সকাল ১১টা নাগাদ লংমার্চ বাগেরহাট পৌছাবে বলে প্রত্যাশা জাতীয় কমিটির জেলা শাখার নেতাদের।
আর লংমার্চের আগমন উপলক্ষে এরই মধ্যে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পান্ন করেছে কমিটির স্থানীয় নেতারা। শহর জুড়ে সর্বত্র এখন আলোচলা সুন্দরবন অভিমুখী লংমার্চ।
তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির বাগেরহাট জেলা আহ্বায়ক ফকরুল হাসান জুয়েল বাগেরহরট ইনফোকে জানিয়েছেন, লংমার্চকে কেন্দ্র করেন তাদের সকল ধরণের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন রামপালের সাপমারী-কাটাখালী এলাকায় কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান বন্ধের দাবিতে স্থানীয় লোকজনকে সাথে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছি।
আন্দোলন করতে যেয়ে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ দলীয় সন্ত্রাসী ও তাদের দোষর পুলিশ বাহিনীর হাতে বিভিন্ন সময়ে আমাদের নেতাকর্মীরা লাঞ্ছিত ও হামলার শিকার হয়েছেন। তবু আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।
তিনি জানান, আগামিকাল সকাল ১১টা নাগাত শহরের বাস ষ্টান্ড এলাকা থেকে লংমার্চকে স্বাগত জানিয়ে সমাবেশ স্থল পুরাতন কোর্ট চত্বরে নিয়ে আশা হবে। বাগেরহাটে জনসভা এবং দুপুরের খাবার শেষে আনুমানিক দেড়টায় সুন্দরবনের পাদদেশে মংলার দীঘরাজে সমাপনি জনসভার উদ্দেশে রওনা করবে বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাগেরহাট কিম্বা দিগরাজে সমাবেশ করতে এখন প্রর্যন্ত তারা কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা বা হুমকি বোধ করছেন না।
সরোজমিন বাগেরহাটের সমাবেশ স্থল পুরাতন কোর্ট চত্বর ঘুরে দেখা গেছে, শেষ হয়েছে মঞ্চ নির্মান সহ অনান্য কাছ। বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে সমাবেশ স্থলে ত্রিপল দিয়ে ছাউনির ব্যবস্থা করা হয়েছে সমাবেশ স্থলে।
রামপাল কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সভাপতি সুশান্ত দাস বাগেরহরট ইনফোকে জানান, রমপালবাসী লংমার্চকে স্বাগত জানাতে অপেক্ষায় আছে। শনিবার সকালে খুলনার সমাবেশ শেষ করে লংমার্চ গেীরম্ভায় পথসভা করে বাগেরহাটে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
কোনা ধরনের বাধা প্রদান করা হলে সাথে সাথে তা প্রতিহত করা হবে বলেন এসময় জানান তিনি ।
তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির মোংলা উপজেলা আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো: নুর আলম বাগেরহরট ইনফোকে জানান, সমাবেশকে কেন্দ্র করে মঞ্চ তৈরি, তরোণ নির্মান সহ তাদের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় হাট-বাজার সহ সব খানে প্রচার মিছিল, পেস্টার, লিফলেট বিতরন ও মাইকিং করা হয়েছে।
বিকাল পাঁচটায় তারা মোংলায় লংমার্চের সমর্থনে মিছিল করেছে। সর্ব সাধারণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
এমময় তিনি সমাপনি সমাবেশে ২০ হাজারের অধিক মানুষের জমায়েত হবে বলে আশাবাদ জানান।
তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষথেকে লংমার্চকে মোংলায় ঠুকতে না দেওয়ার জন্য গতকাল মিটিং হয়েছে বলে তারা শুনেছেন। সমাবেশ স্থল মুখি তাদের যাত্রাকে রামপাল ও মোংলা উপজেলার সিমান্ত স্থান “গোনা ব্রিজ” এলাকায় আটাকে দেওয়া হতে পারে।
লংমার্চ নিয়ে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মান্নান কাজী দাউদ হোসেন বাগেরহরট ইনফোকে জানান, তারা শান্তি পূর্ন ভাবে সমাবেশ করলে তাদের কোন বাধা দেওয়া হবে না।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বাগেরহরট ইনফোকে জানান, লংমার্চ নিয়ে কোন প্রকার সহিংসতা হলে তা মোকাবেলায় তারা প্রস্তুত আছেন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু: শুকুর আলী বাগেরহরট ইনফোকে জানান, সমাবেশ থেকে তারা কোন ধরনের উশৃঙ্খল আচরণ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হব।
এদিকে লংমার্চকে কেন্দ্র করে আইন-শৃংখলা অবনতি বা কোনা ধরনে আশাংকা আছে কি না জানতে চাইলে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা রাতে বাগেরহরট ইনফোকে জানান, বাগেরহাটে লংমার্চে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশসহ প্রয়োজনীয় আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। লংমার্চ শুরুর থেকে যেহেতু কোথাও বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেনি তাই বাগেরহাটেও তাদের প্রশাসন বাধা দেবেনা।
তিনি বলেন, প্রকল্প এলাকা যেহেতু রামপাল সেহেতু তারা যেন রামপালের প্রকল্প এলাকায় বা সে অঞ্চলে তাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে এর জন্য কমিটির স্থানীয় নেতাদের আহবান জানান হয়েছে।
জাতীয় কমিটির পূর্ব নির্ধারিত এ সমাবেশ স্থল বাদ দিয়ে কেন তাদের রামপালে সমাবেশের জন্য আহবান জানান হচ্ছে তা জানতে চাইলে তিনি বাগেরহরট ইনফোকে বলেন, দিগরাজে যে স্থানে তারা সভা করতে চাইছে তারা পাশেই মূল সড়ক থাকায় যানচলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া এর পাশেই মোংলা বন্দর, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ও কোস্টগার্ড এর অফিস তাকায় তারা এ  আহ্বান করেছেন।
এদিকে লংমার্চ স্বাগত জানানর উৎসাচের পাশাপানি বাগেরহাটের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে এখন এক ধরনের  উদ্বেগ উৎকন্ঠা লক্ষ করা গেছে।

২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩ :: নিউজ এডিটর,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।

এসআইএইচ-/বিআই

About ইনফো ডেস্ক

পূর্বের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রামপালের বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঘটনা ঘটেছে
পরের লংমার্চ এখন বাগেরহাটে