প্রচ্ছদ / লেখালেখি / দিনপঞ্জি / খুব একটা না বদলানো এক শহর

খুব একটা না বদলানো এক শহর

• মাসুমা রুনা

আবেগী মানুষ জন্মেছে যেখানে তার নাম ‘বাগেরহাট’। আবেগ অনুভূতির নির্যাস সমস্ত পরিবেশে, বাতাসে, ঘাসে, নারকেল গাছের চিরল পাতার ফাঁকে ফাঁকে। জন্মেই যে শিশু সবুজাভ এক নির্মল বাতাস গায়ে মাখে, শৈশব থেকেই এক সবুজ বীজ বপন হয়ে যায় তার অজান্তেই!

এখানে প্রকৃতি বড় বেশী উদার! নিরবতার ভাষার এক আদি বিদ্যালয় এখানে চিরস্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত। দরিদ্র জনতা ও এখানে মাথা উচু করে চলে, কারনটা খুঁজতে গিয়ে জেনেছি তার চোখেমুখে, মননে, গাছের ঘনত্বের অহং!

একবেলা খেয়ে বাকি দুবেলা উঠোনের পাশের বাগানে গাছের সাম্রাজ্য উপভোগ করে কাটে। নতুন নতুন পাড়া আবিষ্কার করি আর আরও বেশী নিরবতার গাম্ভীর্যে ডুবে যাই!

ঘনবসতি খুঁজতে হয় এখানে, খুঁজতে হয় না সবুজ। মাঝে মাঝে মনে হয় সারাগায়ে মেখে গেছে আল্লাদী সবুজগুলো। নদীর পাড়ে গোলপাতার ঝোপঝাড় আর ছইলা গাছের সমারোহে মনেহয় ওরা সুন্দরবনের আত্নীয়স্বজন। বংশবিস্তার করে এদিকটায়ও এসে পড়েছে কেউ কেউ।

এবেলা খেয়ে একটু জিরিয়ে ওবেলায় হেটে হেটে শহর ঘেষা ডাকবাংলোর নদীর ঘাটে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকলেও উদযাপিত হয় দারুনভাবে বিকেলটা।

পুরাতন কোর্ট, পুরাতন জেলখানা রোড, গার্লস স্কুল রোড সন্ধ্যার পর হাটতে হাটতে মনে হবে, কে জানি রাগসঙ্গীত চর্চা করে চলেছে এক মনে।

বাসাগুলোর ভিতরে দুএকটা কামরায় বাতি চোখে পড়ে। বাকি কামরাগুলোতে আধারের মোহনীয় কাহন।

রাত দশটা বেজে গেলেই পুরো শহর চুপচাপ।
হেটে হেটেই বাসায় ফিরতে হবে। রিকশা পাওয়া মুশকিল ঠিক তখনই।

বাগেরহাট ! !!!
খুব একটা না বদলানো এক শহর!!!

লেখককবি, লেখক ও ফটোগ্রাফার
স্বত্ব ও দায় লেখকের

এসআইএইচ/বিআই/২২ নভেম্বর, ২০১৭

About মাসুমা রুনা

পূর্বের বিদ্যুতের খুঁটি চাপায় শ্রমিকের মৃত্যু
পরের বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবিতে সুন্দরবনের জেলে-বাওয়ালীদের মানববন্ধন