সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্প এলাকায় লাগা আগুন নিভে গেছে। তবে ফের যেন আগুন না লাগে এজন্য দিনভর ওই এলাকা পর্যবেক্ষণে রাখে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে আগুন লাগার কারন অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করেছে।
এর আগে টানা ১২ ঘণ্টা চেষ্টার পর বুধবার (১৩ এপ্রিল) রাত ১০টার দিনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানান বন বিভাগের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান মাহামুদ টিটু।
তিনি বলেন, বুধবার সকাল ১০ টার দিকে বনের ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ফরেস্ট ক্যাম্পের আব্দুল্লাহ’র ছিলা এলাকায় আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে পার্শ্ববর্তী পঁচাকোড়ালিয়া ও নাপিতখালী (বিল) এলাকার বনেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
আগুনে এই এলাকার সুন্দরীসহ লতাগুল্ম জাতীয় গাছপালা পুড়ে গেছে। তবে বনের নাংলি ক্যাম্প এলাকায় বড় গাছপালা কম থাকায় আগুনে মূলত লতাগুল্ম জাতীয় গাছপালাই বেশি পুড়েছে বলে দাবি তার।
এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) জহির উদ্দিন আহম্মেদ।
তিনি বলেন, সুন্দরবনে আগুন লাগার ঘটনা তদন্তে বন বিভাগের গঠিত কমিটি সকাল থেকে কাজ শুরু করেছে। তারা আগুন লাগার কারণ এবং বনের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের কাজে আগামী ১৪ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিবে।
বন বিভাগ গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- ঢাংমারি ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) আব্দুল মান্নান, চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) গাজি মতিয়ার রহমান।
ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার সার্ভিসের বাগেরহাট স্টেশন কর্মকর্তা স্বপন কুমার ভক্ত জানান, তীব্র গরমে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে কাজ করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবারও তাদের তিনটি ইউনিট বনের ওই এলাকায় অবস্থান করে পানি দিয়েছে। বন বিভাগের সাথে পুরো এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ডিএফও মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনের এই অংশের কাছে ভোলা নদী। নদীর অপর প্রান্তেই জনগণের বসতি। বসতি সংলগ্ন বনে স্থানীয় জনগণের অবাধ বিচরণও আগুন লাগার অন্যতম কারণ।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) জহির উদ্দিন আহম্মেদও মনে করেন, স্থানীয়দের অবাধ বিচরণ বনে আগুন লাগার অন্যতম কারণ।
এই অগ্নিকান্ডের মাত্র ১৭ দিন আগে ২৭ মার্চ সুন্দরবনের নাংলি ক্যাম্প এলাকায় আগুন লেগে প্রায় এক একর বনভূমি পুড়ে যায়।
২৭ মার্চের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের পর ৩ এপ্রিল প্রতিবেদন দেওয়া হয়। তাতে অগ্নিকাণ্ডের জন্য বনজীবী ও স্থানীয়দের ‘অসতর্কতা’কে দায়ী করা হয়।