প্রচ্ছদ / খবর / বাগেরহাট থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সাংস্কৃতিক সংগঠক মেজদা’ আর নেই

বাগেরহাট থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সাংস্কৃতিক সংগঠক মেজদা’ আর নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম

বাগেরহাট থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা, নাট্যব্যক্তিত্ব, সাংষ্কৃতিক সংগঠক শেখ নজরুল ইসলাম (৬৮) মৃত্যুবরণ করেছেন। সবার কাছে তিনি ‘মজদা’ নামে পরিচিত ছিলেন।

বুধবার দিনগত রাত আড়াইটায় দিকে বাগেরহাট শহরের দাসপাড়া সংলগ্ন খারদ্বার এলাকার নিজ বাড়িতে অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে, নাতনী, ভাই ও ভাতিজাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট বহুমূখী কলেজিয়েট স্কুল ও খারদ্বার ঈদগাহে জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের পাশাপশি তরুণ বয়স থেকেই রাজনীতি সচেতন ছিলেন শেখ নজরুল ইসলাম। অবিভক্ত ছাত্রলীগের মাধ্যমে তাঁর হাতেখড়ি। তিনি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ রব) বাগেরহাট জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।

শহীদ শুকলাল সঙ্গগীত বিদ্যাপীঠের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শেখ নজরুল ইসলামের হাত ধরে ১৯৭৮ সালের ১৫ অক্টোবর বাগেরহাট থিয়েটর যাত্রা শুরু হয়। গণসংস্কৃ‌তি বিকাশ কে‌ন্দ্রের নির্বাহী প‌রিচালক। একাধারে নাট্যকার, নাট্য নির্দেশক, পরিচালক, অভিনেতা ও সংগঠক শেখ নজরুল ইসলামের মৃত্যুর খবরে বাগেরহাটের সামাজিক, সাংষ্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।

সকালে তাঁর মরদেহ আনা হয় বাগেরহাট থিয়েটর প্রাঙ্গণে। পরে নেওয়া জেলার কেন্দ্রীয় শহীন মিনারে। সেখানে তাঁর দীর্ঘদিনের সহকর্মী, সামাজিক-সাংষ্কৃতিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুহৃদ ও ছাত্ররা ফুলে দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

তাঁর মৃত্যুতে বাগেরহাট থিয়েটার, রুদ্র নাট্যদল, শহীদ শুকলাল সংগীত বিদ্যাপীঠ, প্রেসক্লাব, সিপিবি, ছাত্র ইউনিয়ন, জাসদ (রব), আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।

নজরুল ইসলামের ভাতিজা শেখ শোভন বলেন, বুধবার রাতে আমার মেজো চাচা নজরুল ইসলামের হঠাৎ করে বুকে ব্যাথা শুরু হলে। তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানে থেকে তাকে নিয়ে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

বাগেরহাট থিয়েটারে’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলী বাবু বলেন, স্কুলে পড়ালেখার সময় থেকে শেখ নজরুল ইসলাম নাটকে অভিনয় করতেন। অভিনয় থেকে শুরু করেন নাট্য নির্দেশনার কাজ। ‘নাটক নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের কথা বলে। নাটক হোক শোষণ মুক্তির হাতিয়ার।’- এমন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তাই নাটকের প্রতি ভালবাসা থেকে আমরা কয়েকজন মিলে শহরের পুরাতন জেলখানা রোডে থিয়েটার নামে একটি নাট্য সংগঠন গড়ে তুলি। তবে এই থিয়েটার প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন নজরুল ইসলাম।

নাম নজরুল ইসলাম হলেও তিনি সবার কাছে মেজদা নামে পরিচিত ছিলেন।

জাহাঙ্গীর আলী বাবু বলেন, নজরুলের কাছ থেকে নাটকে অভিনয় শিখে অনেকেই টেলিভিশনে অভিনয়জগতে আজ প্রতিষ্ঠিত। এই নির্মোহ মানুষটিকে হারিয়ে নাট্য অঙ্গনে শূন্যতা তৈরি হলো। এই শূন্যতা পুরণের নয়।

এজি//এসআই/বিআই/২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

About বাগেরহাট ইনফো নিউজ

Exit mobile version