বাগেরহাটের মোল্লাহাটে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৪টি বিদেশি পিস্তলসহ ১১ জন আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার কিছু আছে মোল্লাহাট উপজেলার মধুমতি নদীর আবুল খায়ের সেতুর টোলপ্লাজা থেকে সশস্ত্র ওই সন্ত্রাসীদের আটক করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি ৭.৬২ এমএম চাইনিজ পিস্তল, চারটি ম্যাগজিন, দশ রাউন্ড গুলি, খুর, চাকু ও ১২টি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে ‘বড় ধরণের নাশকতার’ ওই সন্ত্রাসীরা বাগেরহাটে ঢুকছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় শুক্রবার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিপ্লব রায় বাদি হয়ে মোল্লাহাট থানায় মামলাটি দায়ের করেন। বিকেলে ওই মামলায় গ্রপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতের মাধ্যমে বাগেরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এরা হলেন- কাউসার আলী (৪৩), মো. মেহেদী হাসান (২৩), আতাউর রহমান (৩০), মো. খোকন বিশ্বাস (৪৫), খোকন মিয়া (৩৫), আবুল হোসেন (৪৩), মো. ইমদাদুল হক (৩১), জনি মিয়া (২৭), সেলিম শাহ (৩৪), মাসুম পারভেজ (২২) ও প্রসেনজিৎ চন্দ্র দাশ (৩৫)। তাদের সবার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন এলাকায়। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. তৌহিদুল আরিফ বলেন, বৃহস্পতিবার সকালেই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি ঝিনাইদাহের মহেশপুর থানা থেকে মাইক্রোসাবে একটি দল আসবে। তাদের কাছে আগ্নেঅস্ত্র আছে। আমরা তাদের অবস্থান ট্যাপ করতে থাকি।
বিকালের দিকে তাদের লোকেশন গোপালগঞ্জ এবং সেখান থেকে বাগেরহাটের দিকে আগাচ্ছিল তারা। এর প্রেক্ষিতে ডিবির একটি দল নিয়ে আমরা মোল্লাহাট সেতুর টোলপ্লাজার কাছে অবস্থান নেই। সেখানে পৌঁছালে সনাক্ত মাইক্রোবাসটি আটক করে তল্লাসীকালে ৪টি বিদেশি পিস্তল, গুলিসহ ১১ জনকে ধরতে স্বক্ষম হই।
এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে জানিয়ে এসপি বলেন, বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল তাদের। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদরে কাছ থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে।
সূত্র বলছে, ভারত সীমান্তবর্তী ঝিনাইদাহ জেলার মহেশপুর থানা এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে চোরা চালানের সঙ্গে যুক্ত। নিজেদের মাঝে বিরোধে এরআগে মহেশপুরে নিজেদের দলের এক জনকে হত্যাও করে এই দলটি। বাগেরহাটের মোল্লাহাটে এবং খুলনায় তাদের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের সাম্প্রতি সময় বিরোধ হয়েছে। নিজেদের মাঝে আধিপত্য নিয়ে এই বিরোধের জেরে তারা বাগেরহাটে ঢুকছিল।
মামলার বাদি এসআই বিপ্লব রায় বলেন, সবগুলো অস্ত্রই লোড অবস্থায় ছিল। আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে অভিযানটি পরিচালনা করে সবাইকে আটক করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অস্ত্রগুলো তারা ভারত থেকে সংগ্রহ করেছে বলে জানিয়েছে। তাদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামীকাল আদালতের কাছে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।
এদের মাঝে মহেশপুর থানা এলাকার কাউসার আলী, আতাউর রহমান, ইমদাদুল হক ও মাসুম পারভেজ দলটির নেতৃস্থানীয়। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যাবে।