প্রচ্ছদ / বরণীয় যারা / কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ

কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ

Kobi-Rudro-muhammad-shahidullahকবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ (১৯৫৬-১৯৯১)। বাংলাদেশের কবিতায় এক অবিসস্মরণীয় নাম। মাটি ও মানুষের প্রতি আমূল দায়বদ্ধ এই কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে সত্তরের অন্যতম কবি-স্বীকৃতি।

অকাল প্রয়াত এই কবি তার কাব্যযাত্রায় যুগপৎ ধারণ করেছেন দ্রোহ ও প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের শিল্পভাষ্য। সাহস ও স্বপ্নে, শিল্প ও সংগ্রামে আপদমস্তক সমর্পিত এই কবি তার স্বল্পায়ু জীবনকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তারুণ্যের দীপ্র সড়কে। নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আত্মার সঙ্গে; হয়ে উঠেছিলেন তাদেরই কন্ঠস্বর।

‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’– এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি ততোধিক স্পর্ধায় তিনি উচ্চারণ করেছেন- ‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাঁকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা।

মাত্র ৩৪ বছরের স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন।

জীবনপঞ্জি:

১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর (২৯ আশ্বিন) বরিশাল জেলার আমানতগঞ্জের রেডক্রস হাসপাতালে জন্ম গ্রহন রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর। পিতা ডাঃ শেখ ওয়ালীউল্লাহ (১৯৩০-১৯৯৬), মাতা শিরিয়া বেগম (১৯৩৯ – ২০০৪)। পৈতৃক নিবাস বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার অন্তর্গত সাহেবের মেঠ গ্রামে। ১০ ভাই-বোনর মধ্যে ছিলেন রুদ্র সবার বড়।

১৯৬২ : শৈশবের অধিকাংশ সময় তাঁর কেটেছে নানাবাড়ি মিঠেখালি গ্রামে (বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার অন্তর্গত) । এখানকার পাঠশালাতেই তাঁর পড়াশুনা শুরু।
১৯৬৪ : দ্বিতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন সাহেবের মেঠ গ্রামে তাঁর নানার নামে প্রতিষ্ঠিত “ইসমাইল মেমোরিয়াল স্কুল” – এ।

১৯৬৬ : মোংলা থানার “সেন্টপলস উচ্চ বিদ্যালয়” – এ চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রপত্রিকা পড়া ও কবিতা আবৃত্তির প্রতি তাঁর ঝোক দেখা যায়। এ স্কুলে পড়াকালীন নিয়মিত কবিতা আবৃত্তি ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন।

১৯৬৮ : মামাতো ভাইদের সঙ্গে নিয়ে নানীর ট্রাংক থেকে টাকা চুরি করে গড়ে তোলেন “বনফুল” নামের লাইব্রেরি। এ সময় থেকেই তিনি কাঁচা হাতে লিখতে শুরু করেছেন। খেলাধুলার খুব আগ্রহ। ভালো খেলেন। তাঁর কিশোর বন্ধুদের নিয়ে তৈরি করেন মোংলার প্রথম ক্রিকেট দল।

১৯৬৯ : উনসত্তুরের গণঅভ্যুত্থান। কিশোর শহিদুল্লাহ যোগ দেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গণআন্দোলনের কর্মসূচিতে। হরতাল, মিছিল, মিটিংয়ে নিয়মিত অংশ নেন।

১৯৭০ : ‘কালো টাইয়ের ফাঁস’ নাটকে অভিনয়। ভাইবোন ও পাড়াপ্রতিবেশীদের নিয়ে অভিনীত এ নাটকের নির্দেশকও ছিলেন তিনি।

১৯৭১ : মুক্তিযুদ্ধ শুরু। শহিদুল্লাহ তখন মাত্র নবম শ্রেণীর ছাত্র। অস্থির হয়ে ওঠেন যুদ্ধে অংশ নেবার জন্য। কিন্তু তাঁর বাবাকে পাকসেনারা ধ’রে নিয়ে গেলে তাঁর মা প্রথম সন্তান শহিদুল্লাহকে কিছুতেই যুদ্ধে যেতে দেন নি। যুদ্ধে যেতে না পারার বেদনা, সেই সঙ্গে চারপাশের নৃসংশ ধ্বংসযজ্ঞ, দেশব্যাপী পৈশাচিক হত্যা-নির্যাতন তাঁর ভাবনাজগৎকে তুমুলভাবে আন্দোলিত করে। পিতার আকাঙ্খা ছিল শহিদুল্লাহ ডাক্তার হবে। যুদ্ধের আগ পর্যন্ত শহিদুল্লাহরও স্বপ্ন ছিল তাই। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধ, স্বাধীন বাংলাদেশে  তাঁর স্বপ্নের পটভূমি বদলে দেয়।

১৯৭২ : ঢকায় এসে দশম শ্রেণীতে ভর্তি হন  ‘ওয়েষ্ট এন্ড হাইস্কুলে’ – এ। থাকতেন ৫০ লালবাগে, সেজমামার বাসায়। এ সময় থেকেই নিয়মিতভাবে কবিতা, গান, গল্প ও নাটক লিখতে শুরু করেন।
২৬ নভেম্বর (রবিবার) ‘দৈনিক আজাদ’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয় তাঁর কবিতা ‘আমি ঈশ্বর আমি শয়তান’।

১৯৭৩ : ফেব্রুয়ারিতে সহযোগী সম্পাদক হিশেবে (সম্পাদক-মিয়া মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান) প্রকাশ করেন একুশের সংকলন ‘দুর্বিনীত’। প্রকাশক- দুর্বিনীত শিল্পসাহিত্য গোষ্ঠি, ৫০ লালবাগ, ঢাকা। সংকলনের প্রচ্ছদ করেন তিনি।

১৩ ফেব্রুয়ারিতে বেতারে ‘এখনো বেঁচে আছি’ নামে স্বরচিত কবিতা পাঠ।
এস.এস.সি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনে মুহম্মদ শহিদুল্লাহ নামের সঙ্গে যুক্ত করেন ‘রুদ্র’। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ।
চার বিষয়ে লেটার মার্কস-সহ এস.এস.সি-তে বিজ্ঞান শাখায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ। এইচ.এস.সি-তে মানবিক শাখায় ভর্তি হন ‘ঢাকা কলেজ-এ।

১৯৭৪ : ফেব্রুয়ারিতে সম্পাদনা করেন কবিতাপত্র ‘অনামিকার অন্য চোখ এবং চুয়াত্তোরের প্রসব যন্ত্রনা’। ‘আমরা পদাতিক সম্প্রদায়’- এর পক্ষ থেকে প্রকাশিত এ সংখ্যায় কবিরা ছিলেন- শহীদুল্লাহ কায়সার, হাসান হাফিজুর রহমান, আবুহেনা মোস্তফা কামাল, শামসুর রাহমান, ফজল শাহাবুদ্দিন, আবদুল গণি হাজারী, আবু কায়সার, নির্মলেন্দু গুণ, রফিক আজাদ, মহাদেব সাহা, উমাশঙ্কর  বন্দ্যোপাধ্যায়, দাউদ হায়দার, মখদুম মাশরাফী, মিয়া মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, ওমর আলী ও রুদ্র।

১৯৭৫ : ফেব্রুয়ারিতে সম্পাদনা করেন কবিতাপত্র ‘অশ্লীল জোৎস্নায়’। সম্পাদকীয়তে ‘উপলিকা’ নামে ‘না-কবিতা, না-গল্প’ আঙ্গিকের প্রস্তাবনা।
দুই বছরের মাত্র ১৮টি ক্লাসে উপস্থিত হয়েও মানবিক শাখায় দ্বিতীয় বিভাগে এইচ.এস.সি পাশ করেন।

১৯৭৬ : ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তি।

১৯৭৮ : মে মাসে আলী রীয়াজ ও মঈনুল আহসান সাবের- সঙ্গে যৌথ সম্পাদনায় প্রকাশ করেন প্রবন্ধ সংকলন ‘স্বরূপ অন্বেষা’। আবিদ রহমান, সলিমউল্লাহ খান, আলী রীয়াজ ও মোরশেদ শিরোনামে সম্পাদকীয়টি লেখেন রুদ্র।
কবি বন্ধু কামাল চৌধূরী, জাফর ওয়াজেদ, রেজা সেলিম, মোহন রায়হান, আলী রীয়াজ, বদরুল হুদা প্রমুখকে নিয়ে গঠন করেন ‘রাখাল’ নামে সাহিত্য প্রকাশনা সংস্থা।

১৯৭৯ : ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয় রুদ্রের প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘উপদ্রুত উপকূল’। প্রকাশক- আহমদ ছফা, বুক সোসাইটি, বাংলাবাজার, ঢাকা। তরুণ পাঠক ও কাব্যপ্রেমীদের মধ্যে বিপুল সাড়া জাগায় বইটি।
২১ ফেব্রুয়ারিতে আবিদুর রহমান- এর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত গল্প সংকলন ‘প্রেক্ষাপট ৭১’। গ্রন্থের প্রকাশক- রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ, রাখাল প্রকাশনী, সিদ্ধেশ্বরী সড়ক, ঢাকা।
মার্চে রাখাল প্রকাশনীর পক্ষে রুদ্র কর্তৃক প্রকাশিত হয় ‘সাহস’ কবিতা পত্র। সম্পাদনায় ছিলেন আলী রিয়াজ ও সাজ্জাদ হোসেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বচনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন মনোনীত পরিষদে সাহিত্য সম্পাদক পদপ্রার্থী হন। অবস্য নির্বাচনে বন্ধু আলী রীয়াজের কাছে পরাজয় বরণ করেন।
স্নাতক (সম্মান) শেষ পর্বের পরীক্ষা দেবার কথা থাকলেও, ক্লাশে উপস্থিতির হার কম থাকায় বিভাগীয় সভাপতি রুদ্রকে পরীক্ষায় অংশগ্রহনের অনুমতি দেন নি।

১৯৮০ : জানুয়ারিতে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা-র সঙ্গে যুগ্ম সম্পাদনায় বাংলাদেশের কবিতা নিয়ে ‘Poiem’ নামক (ইংরেজি ভাষায়)  কবিতা পত্র প্রকাশ।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা ও কামাল চৌধুরীকে নিয়ে তিনি গঠন করেন ‘দ্রাবিড়’ প্রকাশনা সংস্থা। পরবর্তীকালে এ প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত হন বন্ধু, কথাসাহিত্যিক ইসহাক খান।
এ বছরই ‘উপদ্রুত উপকূল’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে লাভ করেণ ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরষ্কার’।
মনোনীত হন ‘লেখক ইউনিয়ন’- এর যুগ্ম আহবায়ক।
দ্বিতীয় শ্রেনীতে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৮১ সালের ২৯ জানুয়ারি বিয়ে করেন নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন-কে।
এ বছরের ফ্রেব্রুয়ারিতে দ্রাবিড় প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় কাব্য গ্রন্থ ‘ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম’। ‘ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থের জন্য যুগ্মভাবে ‘মুনির চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার’ প্রাপ্তি।

১৯৮২ :  ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনে ৪২ টি সাংস্কৃতিক সংগঠন মিলে গঠিত হয় ‘সংগ্রামী সাংস্কৃতিক জোট’। পরবর্তীকালে এটি ‘সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট’ নামে প্রকিষ্ঠিত হয়। রুদ্র ছিলেন এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও আহবায়ক কমিটির সদস্য।

প্রিয় কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও তাঁর স্ত্রী তসলিমা নাসরিন। কোলে কবির ভাগ্নি সেঁজুতি। ছজুতি ১৯৮৫ সালে তোলা মোংলার বাড়িতে, কবির ভাগ্নি সেঁজুতির প্রথম জন্মদিনে। ছবিটি কবির অনুজ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক ড. হিমেল বরকত স্যারের সৌজন্যে প্রাপ্ত।

১৯৮৪ : এপ্রিলে সব্যসাচী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘মানুষের মানচিত্র’ । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন।

১৯৮৬ : ফেব্রুয়ারিতে চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ ‘ছোবল’ প্রকাশিত হয় দ্রাবিড় প্রকাশনী থেকে।
এ বছর তার বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিনের সঙ্গে।

১৯৮৭ : ফেব্রুয়ারির ০১ ও ০২ তারিখে ‘শঙ্খল মুক্তির জন্যে কবিতা’ শ্লোগান নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ‘প্রথম জাতীয় কবিতা উৎসব’। স্বৈরাচারী সরকারের ‘এশীয় কবিতা উৎসব’ এর প্রতিবাদে আয়োজন করা হয় এ উৎসবের। এতে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন রুদ্র। তিনি কার্যনীর্বাহি পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। উৎসবের উদ্বোধনী সঙ্গীতটিও (শৃংখল মুক্তির জন্যে কবিতা আজ) লেখেন তিনি।

১৯৮৮ : দ্বিতীয় জাতীয় কবিতা উৎসবে কবিতা পরিষদের নেতৃবৃন্দের কয়েক জনের সঙ্গে মতবিরোধ দেখাদেয়। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগঠিত জাতীয় কবিতা পরিষদের ভেতরও স্বৈরাচারী প্রক্রিয়া ঢুকে পড়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন এবং সকল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ঘোষনা দিয়ে মঞ্চে কবিতা পাঠ করেন। ফলে মতবিরোধ তীব্র আকার ধারন করে। সৃষ্টি হয় পারস্পারিক দুরত্ব। অভিমানে, ক্ষোভে রুদ্র নিজেকে গুটিয়ে নেন প্রিয় সংগঠন থেকে।
এ বছরের আগষ্টে মুক্তধারা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় তার ষষ্ঠ কাব্যগ্রন্থদিয়েছিলে সকল আকাশ’।

১৯৮৯ : গান রচনা ও সুরারোপে আত্ম নিয়োগ করেন। তাঁর বিখ্যাত ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ গানটি এসময়ে লেখা। উল্লেখ্য, পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরনোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন।
গ্রামের বাড়ি মিঠেখালীতে গোলাম মহম্মদ, আবু জগলুল মজ্ঞু, মাহে আলম, ফারুক হোসেন, নাজমুল হক প্রমুখককে নিয়ে গড়ে তোলে গানের সংগঠন ‘অন্তর বাজাও’। মিঠেখালিতে প্রতিষ্ঠা করেন ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন ‘অগ্রদূত ক্রীড়া চক্র’।

১৯৯০ :  ১৪ ফেব্রুয়ারি সপ্তম কাব্যগ্রন্থ ‘মৌলিক মুখোশ’ প্রকাশিত হয় সংযোগ প্রকাশনি থেকে।
এ সময় কবিতা ও গানের পাশাপাশি ‘বিষ বিরিক্ষের বীজ’, ‘একটি চলচ্চিত্র কাহিনী’ সহ লিখেছেন একাধিক গল্প, কব্যনাট্য।

১৯৯১ : নির্বাচিত হন ‘বাংলাদেশ সঙ্গীত পরিষদ’- এর প্রকাশনা সচিব।
০৬ মে গীতিকার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হন বাংলাদেশ টেলিভিশনের শিল্পী তালিকায়।
দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে স্মরণকালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসে (২৯ এপ্রিল) দুর্গত মানুষের সাহায্যার্থে বাংলাদেশ সংগীত পরিষদের ‘মানুষের জন্য মানুষ’ সংকলনটি সম্পাদনা করেন। ১৮ মে প্রকাশিত হয়।
১০ জুন পাকস্থলিতে আলসারজনিত অসুস্থতায় হয়ে ভর্তি হনঢাকার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে। খানিকটা সুস্থ হয়ে ২০ জুন বাসায় ফেরেন।

২১ জুন শুক্রবার  (০৭ আষাঢ় ১৩৯৮) সকাল সাড়ে সাতটায় দাঁত ব্রাশ করার সময়ে  Sudden cardiac Arrest – এ আক্রান্ত হন। এর মাত্র ১০/১৫ মিনিট পর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে, ঢাকার ৫৮/এফ পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলা ভাষায় অসামান্য কবি রুদ্র।

লেখক : সুমেল সারাফাত
দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার মোংলা প্রতিনিধি,
রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও কবির ছোট ভাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

 

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version