নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম

বাগেরহাটে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে বাবা-ছেলে একই দিন মারা গেছেন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে জেলার দুই উপজেলাতে মারা গেছেন আরও দুজন।
আজ শনিবার সকালে খুলনা ‘কোভিড হাসপাতালে’ (ডায়াবেটিক হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় পল্লিচিকিৎসক ইয়াদ আলী (৬০) মারা যান। বিকেলে ইয়াদ আলীর ছেলে খানজাহান আলী (২৪) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এর আগে ৬ জুলাই কোভিড-১৯ রোগের উপসর্গ থাকায় ইয়াদ আলীর পুরো পরিবারের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। ৭ জুলাই প্রতিবেদনে ইয়াদ আলীসহ তাঁর পরিবারের চারজনের করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৮ জুলাই সকালে ইয়াদ আলীকে খুলনা কোভিড হাসপাতালে ও তাঁর ছেলেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে এ রোগের উপসর্গ নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা ফকিরহাট সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ আবদুস ছালাম (৫২) শনিবার বিকেলে মারা গেছেন।
এ ছাড়া বিকেলে বাগেরহাট সদরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আনসার ভিডিপির কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান (৪৫)। তিনি জেলা কমান্ড্যান্টের কার্যালয়ের (আনসার ভিডিপি) সহকারী জেলা কমান্ড্যান্ট। শনিবার বিকেলে সাড়ে পাঁচটায় বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ওই কর্মকর্তাকে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। কয়েক দিন ধরে তিনি উপসর্গ নিয়ে জেলা কমান্ড্যান্টের কার্যালয়ের ব্যারাকে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) মো. বেলফার হোসেন সন্ধ্যায় বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের মুণিগঞ্জ এলাকার আনসার ভিডিপি কার্যালয়ের সহকারী জেলা কমান্ড্যান্ট মো. মিজানুর রহমানকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আমরা তাঁকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। নমুনা পরীক্ষার পর জানা যাবে তিনি করোনা পজিটিভ ছিলেন কি না।’
বাগেরহাট জেলা কমান্ড্যান্টের কার্যালয়ের (আনসার ভিডিপি) জেলা কমান্ড্যান্ট নাহিদ হাসান সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদককে বলেন, সহকারী জেলা কমান্ড্যান্ট মো. মিজানুর রহমান আনসার ভিডিপি কার্যালয়ের ব্যারাকে একাই থাকতেন। কয়েক ধরে তিনি জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তিনি হাসপাতালে না গিয়ে ব্যারাকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শনিবার বিকেলে হঠাৎ তাঁর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাঁরা তাঁকে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। শ্বাসকষ্ট ছাড়াও তাঁর ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ ছিল। এই কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি বরিশালে। তাঁর স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে।
ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন, খুলনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় পল্লিচিকিৎসক ও তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ফকিরহাট উপজেলায় মোট চারজনের মৃত্যু হলো।
করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া আবদুস ছালাম সকালে ফকিরহাট হাসপাতালে আসেন। তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, এ নিয়ে বাগেরহাটে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ শনিবার খুলনা ও যশোর থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে জেলায় আরও ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এ নিয়ে জেলায় সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৮৮। এর মধ্যে ১৯০ জন সুস্থ ও অন্যরা চিকিৎসাধীন।
এজি/আইএইচ/বিআই/১১ জুলাই, ২০২০
Bagerhat Info Largest Bagerhat Online Portal for Latest News, Blog, Informations & Many More