ব্যাপক শিলাবৃষ্টিতে বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের দুই সহস্রাধিক টিনের তৈরি বসত ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, পুলিশ ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
শুক্রবার (১ এপ্রিল) ভোরের দিকে ঝড়ো বাতাসের সাঙ্গে শিলাবৃষ্টি ফলে ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
গ্রামগুলোর মধ্যে গজালিয়া ইউনিয়নের সোনাকান্দা, জোবাই, বিষেরখোলা, মাদারতলা, বটতলা, সাহসপুরে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে।
বিকেলে ক্ষতিগ্রস্ত ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী মাহবুবুর রশিদ।
বিষেরখোলা গ্রামের ইলিয়াস হোসেন দুলাল ও পূর্ব গজালিয়া গ্রামের যমুনা রাণী বিশ্বাস জানান, গভীর রাত থেকেই ঝড়ো বৃষ্টি শুরু হয়। ভোরের দিকে মুষলধারে বৃষ্টির সাঙ্গে বড় বড় বরফ টুকরো (শিলা) পড়তে থাবে। তিনশ’ থেকে চারশ’ গ্রাম ওজনের শিলার আঘাতে টিনের চালে অসংখ্য বড় বড় ছিদ্র হয়ে গেছে। ঘরের ভেতরের মালামাল নষ্ট হয়েছে।
মাদারতলা গ্রামের প্রবীণ কৃষক জাজ্জাক আলী (৭৩) বলেন, আমার বয়সে কোনদিন এতো বড় শিলা পড়তে দেখিনি। পাথরের আকারের এক একটা শিলা।
গজালিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বলেন, শিলাবৃষ্টিতে টিন দিয়ে তৈরি বাজারের প্রায় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চাল ছিদ্র হয়ে বৃষ্টির পানিতে প্রতিটি দোকানের মালামাল নষ্ট হয়েছে।
গজালিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইসহাক আলী জানান, শুক্রবার ভোরে মুষলধারে বৃষ্টির সঙ্গে বড় বড় শিলার আঘাতে আমার ওয়ার্ডের বেশির ভাগ টিনের তৈরি ঘর ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঘরের ভেতর থেকে এখন আকাশ দেখা যাচ্ছে। ওইসব ঘর একেবারেই বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, এ ইউনিয়নে প্রায় চার হাজার বসত ঘর (খানা) রয়েছে। এর মধ্যে শুক্রবারের শিলা বৃষ্টিতে প্রায় তিন সহস্রাধিক টিনের তৈরি স্থাপনার চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। আকষ্মিক এ শিলাবৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েছে এখানকার নিন্ম আয়ের মানুষ।
কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাশ্বতী এদবর বলেন, শিলাবৃষ্টিতে প্রায় ২০০ হেক্টর জমির বোরো ধান ও ১০ হেক্টর জমির ভূট্টার ক্ষতি হয়েছে।
কচুয়ার ইউএনও কাজী মাহবুবুর রশিদ ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যায় বলেন, শিলা বৃষ্টিতে গজালিয়া ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রামের টিনের তৈরি ৮০ ভাগ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
Bagerhat Info Largest Bagerhat Online Portal for Latest News, Blog, Informations & Many More