প্রচ্ছদ / খবর / বাগেরহাটে নবান্ন উৎসব

বাগেরহাটে নবান্ন উৎসব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম

bagerhat-pic-115-11-2016বাগেরহাটে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পিঠা মেলার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার অগ্রহায়ণের প্রথম দিন (১৫ নভেম্বর) সকালে বাগেরহাট স্বাধীনতা উদ্যানে এ অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন।

বাগেরহাটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর শওকাত আলী বাদশা, বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মামুন-উল-হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) গৌতম কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।

 

পরে অতিথিরা স্বাধীনতা উদ্যানে আয়োজিত দিনব্যাপী পিঠা মেলা ‍ঘুরে দেখেন। মেলায় শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের মোট ২০টি স্টল বাহারি পিঠার পসরা নিয়ে যোগ দেয়।

এছাড়াও  নবান্ন উৎসবের আলোচনা সভা শেষে স্বাধীনতা উদ্যানের বিজয় মঞ্চে আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।

সাঁওতালরা পৌষ-মাঘ মাসে শীতকালীন প্রধান ফসল ঘরে তুলে উদ্যাপন করে সোহরায় উৎসব। তারা সাতদিন সাত রাত গানবাজনার মাধ্যমে এ উৎসব পালন করে। উসুই উপজাতি অন্নদাত্রী লক্ষ্মীকে অভ্যর্থনা জানিয়ে মাইলুকমা উৎসব পালন করে। জুম চাষি ম্রো উপজাতি চামোইনাত উৎসবে মুরগি বলি দিয়ে নতুন ধানের ভাতে সবাইকে ভূরিভোজন করায়। ফসল তোলার পর  গারো উপজাতি ফল ও ফসলের প্রাচুর্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশার্থে পালন করে পানাহার ও নৃত্যগীতবহুল ওয়ানগাল্লা উৎসব।

বাংলাদেশে নবান্ন উৎসব পালন করত প্রধানত হিন্দু সম্প্রদায়। হেমন্তে আমন ধান কাটার পর অগ্রহায়ণ কিংবা পৌষ মাসে গৃহস্থরা এ উৎসব পালনে মেতে উঠত। উৎসবের প্রধান অঙ্গ ছিল নতুন চালে পিতৃপুরুষের শ্রাদ্ধ করা। পরে দেবতা,  অগ্নি, কাক, ব্রাহ্মণ ও আত্মীয়-স্বজনদের নিবেদন করে গৃহকর্তা ও তার পরিবারবর্গ নতুন গুড়সহ নতুন অন্ন গ্রহণ করতেন।

এ উপলক্ষে বাড়ির প্রাঙ্গণে  আলপনা আঁকা হতো। পিঠা-পায়েসের আদান-প্রদান এবং আত্মীয়-স্বজনের আগমনে পল্লীর প্রতিটি গৃহের পরিবেশ হয়ে উঠত মধুময়। সর্বত্র গুঁড়ি কোটার শব্দ, শাঁখের শব্দ ইত্যাদিতে গ্রামাঞ্চল হয়ে উঠত প্রাণবন্ত। পাড়ায়-পাড়ায়, বাড়িতে-বাড়িতে বসত  কীর্তন,  পালাগান ও জারিগানের আসর।

কৃষকরা নতুন ধান বিক্রি করে নতুন পোশাক-পরিচ্ছদ কিনত। বর্তমানে সেসবের অনেক কিছুই লোপ পেয়েছে।

এইচ/এসআই/বিআই/১৫ নভেম্বর, ২০১৬

About বাগেরহাট ইনফো নিউজ