নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে (১১) ধর্ষণে অভিযোগে প্রতিষ্ঠান সুপারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে ওই ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে শরণখোলা থানায় মাদ্রাসা সুপার মো. ইলিয়াছের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। ধর্ষণের পর বিষয়টি কাউকে না জানাতে ওই শিক্ষক নানা ভাবে শিশুটিকে ভয়ভীতি দেখায় বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বাগেরহাট সদর হাসপাতালে শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরে বাগেরহাট আদালতে জবানবন্দী প্রদানের জন্য নেওয়া হয়।
গত ৮ আগস্ট সকালে ওই মাদ্রাসা সুপারের কাছে পড়তে গিয়ে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হলেও পরিবার মামলা করে ১২দিন পর গত সোমবার রাতে।
মামলার একমাত্র আসামি উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের উত্তর খোন্তাকাটা রাশিদিয়া (সতন্ত্র) এবতেদায়ী মাদ্রাসার সুপার মো. ইলিয়াছ জমাদ্দার (৪৮) শরণখোলার পূর্ব রাজাপুর গ্রামের প্রয়াত আ. গফফার জোমাদ্দারের ছেলে। মামলা দায়েরের পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহারে বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত ৮ আগস্ট সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উত্তর খোন্তাকাটা রাশিদিয়া (সতন্ত্র) এবতেদায়ী মাদ্রাসার সুপার মাওলানা ইলিয়াছের কাছে পড়তে যায় পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রী। এসময় ওই শিক্ষক তাকে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে ডেকে নেয় এবং আটকে ধর্ষণ করে। এরপর বিষয়টি কাউকে না জানাতে ওই শিক্ষক শিশুটিকে ভয়ভীতি দেখায়।
পরে শিশুটির রক্তক্ষরণ শুরু হলে ওই সুপার তাকে বাড়িতে পৌছে দিয়ে বাবা-মাকে বলেন, মাদ্রাসায় যাবার সময় সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে ইটের আঘাত পেয়ে সে আহত হয়েছে। তখন তাকে সুস্থ করতে নিজেই ঝাঁড়ফুক ও পানি পড়া দেয় ওই সুপার এবং স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসককে দেখায়। কিন্তু তাতেও সুস্থ না হওয়ায় পরে তাকে পরামর্শে মোরেলগঞ্জ উপজেলার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় পরিবার।
ওই ক্লিনিকের চিকিৎসকরা শিশুটিকে দেখে জানায়, সিঁড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার আঘাতের কারণে রক্তক্ষরণ নয়, অন্য কারণ থাকতে পারে। এরপরে জানতে চাইলে শিশুটি তার বাবা-মাকে ওই দিনের ঘটনা জানায়। বিষয়টি জানাজানি হলে, সুপার ওই মেয়ের বাবা-মায়ের হাত-পা ধরে ক্ষমাও চান। এরপরে থেকে তিনি গা ঢাকা দেন।
শিশুটির মা কান্না জড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, ‘রক্ত অবস্থায় দুজন ছাত্রীতে আমার মাইয়ারে (মেয়ে) সেদিন হাতে হাতে বাড়িতে নিয়ে আইছে। পরে মেয়ে আমারে বলছে, ইলিয়াছ তাকে কি করছে। আর যেন কোন মাইয়ার এই অবস্থা না হয়। আমি এর বিচার চাই।’
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কুমার সরকার বলেন, অভিযুক্ত ওই মাদ্রাসা শিক্ষককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে জবানবন্দী নেওয়ার জন্য বাগেরহাট আদালতে পাঠানো হয়েছে।
তবে এবিষয়ে অভিযুক্ত ওই মাদ্রাসা সুপারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এসএইচ//এসআই/বিআই/২০ আগস্ট ২০১৯
Bagerhat Info Largest Bagerhat Online Portal for Latest News, Blog, Informations & Many More