বাগেরহাট সরকারি মহিলা কলেজ
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট ইনফো ডটকম

বাগেরহাট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া আন্দোলন দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে। ক্লাস বর্জন করে বৃহস্পতিবারও (৩১ অক্টোবর) অধ্যক্ষকে অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্রীরা।
এদিকে জরুরি সভা করে অধ্যক্ষকে অপসারণে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কলেজের শিক্ষক পরিষদ।
কলেজ সূত্র জানায়, বুধবার বেলা দুইটায় বাগেরহাট সরকারি মহিলা কলেজ শিক্ষক পরিষদ অধ্যক্ষ এস এম রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, এক শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে জরুরি সভা ডাকে। শিক্ষক পরিষদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সম্পাদক সাহানুর আক্তার। সভায় কলেজের ৩০ শিক্ষকের ২৬ জন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় শিক্ষকেরা অধ্যক্ষ এস এম রফিকুল ইসলামের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেন। পাশাপাশি অধ্যক্ষের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকেরাও সব ধরনের ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন। একই সঙ্গে কর্মদিবসের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অধ্যক্ষকে অপসারণ করা না হলে ৫ নভেম্বর থেকে কলেজের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা, বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষাসহ সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেয় শিক্ষক পরিষদ।
এর আগে ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজের ২৪ জন শিক্ষক শিক্ষামন্ত্রী, সচিব ও জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে। তবে অধ্যক্ষ বলেছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। কলেজের কিছু শিক্ষক তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে এবং শিক্ষার্থীদের উসকানি দিচ্ছেন।
বুধবার কলেজের অর্থনীতির শিক্ষক আসাদুজ্জামানকে ‘আইসিটি ক্লাস চলাকালীন ছাত্রীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও অধ্যক্ষের রুমে ছাত্রীদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের’ অভিযোগে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে নোটিশ করা হয়। একই সঙ্গে ওই শিক্ষকের আইসিটি বিষয়ে ক্লাস গ্রহণ বন্ধ থাকবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। ওই নোটিশ দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানান কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রীরা।
আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো কলেজের সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ক্লাসে যাননি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জটলা করে অধ্যক্ষবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকেল পর্যন্ত ছাত্রীরা কলেজে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, অধ্যক্ষের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ক্লাসে ফিরবেন না। একই সঙ্গে তাঁরা অধ্যক্ষকে দুর্নীতিবাজ ও স্বেচ্ছাচারী আখ্যা দিয়ে তাঁর বিচার দাবি করেন।
কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখ থেকে তাঁদের টেস্ট পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। অধ্যক্ষ স্যারের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস হবে না। তাঁরা পরীক্ষায়ও অংশ নেবেন না।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে এস এম রফিকুল ইসলাম বলেছেন, বৃহস্পতিবার সকল শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তা তিলকে তাল করে উপস্থাপন করা হয়েছে।
শনিবার থেকে কলেজে নিয়মিত সব ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলেও আশাবাদ তাঁর।
এসএইচ/এসআই/বিআই/৩১ অক্টোবর, ২০১৯
আরও পড়ুন- মহিলা কলেজ অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি
Bagerhat Info Largest Bagerhat Online Portal for Latest News, Blog, Informations & Many More