নারীকে পণ্য বানানো বন্ধ হোক- আসুন আমরা ই সচেতনতা বৃদ্ধি করি
সকল অন্যায়ের বিপক্ষে আছি, থাকবো। অনলাইন ভিত্তিক সব ইভেন্টেও সমর্থন। আজ সবাই সোচ্চার তনু নিয়ে। প্রতিদিন হাজার তনু এমন করুণ পরিণতি বরণ করে নিচ্ছেন। কত জন তনুদের আমরা দেখতে পাচ্ছি? কজনের খবর রাখছি!
বস, আসেন একটি দিকে চোখ মেলে তাকাবার চেষ্টা করি। নারীকে পণ্য বানানো এটাও ধর্ষনের মতো একটি গর্হিত কাজ। কিছুদিন আগে আমাদের এক বোন (ইশ্পা) একটি চাকুরীর ভাইভা দিতে গিয়েছিলেন। তিনি ভাইভাতে সব থেকে ভালো করলেন তবে বস বললেন, তারা ফ্রেশ মেয়ে খুঁজছেন! এখন ফ্রেশ বলতে কী বুঝিয়েছিলেন সেটা আপনারা বুঝে নিন। এরপর নানা উক্তি তো আছেই।
শামীমা নামের আমার আর এক বোন গিয়েছিলেন একটি বহুজাতিক কোম্পানির কান্ট্রি অফিসে। সেখানে তাকে বলা হলো, এখানে এইসব পোশাক পরে থাকতে হবে। দিনে ৪ বার ওয়াশ রুমে এ গিয়ে নিজের গ্ল্যামার ঠিক রাখবেন। মাঝে মাঝে ফরেনার বায়ার আসলে প্লেজার ট্যুরে যেতে হবে। এইসবে রাজি হলে আমরা আপনাকে হাই স্যালারিতে নিয়ে নেব এবং আরও সুবিধা দেবো!।
খন্দকার নাসরিন জাহান নামের আমার আর এক বোন অনেকদিন ধরে মিডিয়াতে কাজ করতে চাইছিলেন। তার জন্য দুটি অফার এনে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আপনাকে আমি রেফার করতে পারি তবে অনেক ব্যাপারের দ্বায় আমার হাতে নেই। তিনি রাজিও হলেন তবে শর্ত দেখে তিনি ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিলেন! হয়তো ইশপা, শামীমা, নাসরিনেরা একটি পারিবারিক মূল্যবোধে বড় হয়েছেন এবং তারা একটা পরিচ্ছন্ন- পবিত্র জীবনের স্বপ্ন দেখেন বলেই নিজেকে হাটে তুলতে পারেন নি।
আমার খুব কাছের বন্ধু আসিফ চৌধুরী একটি বহুজাতিক সেল ফোন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কর্তা। তার হাতে ছোটো বড় কিছু চাকুরি সব সময় থাকে। সেল ফোন ডিভাইজ কোম্পানিতে আজ কী হচ্ছে জানেন? বি পি মানে ব্রান্ড প্রোমোটার নামের মেয়েদের সেখানে বেছে বেছে নিয়োগ দেওয়া হয়। মেইন যোগ্যতা হচ্ছে গ্ল্যামার এবং সাথে কিছু শর্ত! বন্ধু আসিফ এইসব মানতে পারেন না তাই নিজে ঘৃণা নিয়ে ব্যাপারটা দেখে এবং এইসব দূরে থাকে ! বড় বড় সার্ভিস কোম্পানিতে যাবেন। দেখবেন সুন্দরি সুন্দরি মেয়েদের মুখে মেকআপ লাগিয়ে ডল বানিয়ে রাখা হয়। তারা আপনাদের উপর প্রভাব বিস্তার করবে এবং আপনি পণ্য কিনবেন। কোথাও কোথাও অনেক অনৈতিক কাজেও সাড়া দিতে হয়!
মিডিয়াতে যাবেন। সেখানে আগে টি ভি প্রোগ্রামের বসেদের হ্যাপি করেন। এরপর প্রোডিউসারের কাছে নিজেকে তুলে ধরেন। এরপর তো এরপর! নারীকে ধর্ষন যেমন সীমার বাইরের অপরাধ ঠিক নারীকে পণ্য বানানো কম অপরাধ নয়। নারী কখনো স্ব ইচ্ছায় পণ্য হন, কখনো বাধ্য হন আবার কখনো বিত্ত বৈভব এতো বেশী টানে যে, নিজেকে ধরে রাখা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। এইভাবে হাজার উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। এই নৈতিক অবক্ষয়ের যুগে যে যেইভাবে পারে সেইভাবে সুযোগ নিয়ে নিচ্ছেন। কর্পোরেট বেনিয়ারা নারীদের দক্ষতা নয়, গ্ল্যামার ই বেছে নেন এরপর মিডিয়ার ভাষায়, দিলাম ডানা কেটে এইবার উড়ে যাবে কই!
তনু, পূর্নিমা, সাথী, ইয়াসমিনেরা অসভ্য কিছু মানুষের লালসার শিকার হয় অন্যদিকে ভদ্রবেশী শয়তানদের হাতে প্রতিদিন কয়েক হাজার নারী তার সম্রম হারান। আসুন তাই একদিকে ধর্ষনের বিরুদ্ধে দাড়াই অন্যদিকে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করি যেন নারীকে পণ্য বানানো না হয়।
নারী একজন মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকুক, পণ্য নয়। পণ্য তারাই হোক, যারা বেশ্যাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
Bagerhat Info Largest Bagerhat Online Portal for Latest News, Blog, Informations & Many More