আমদানী – রপ্তানি বানিজ্যের লাইফ লাইন দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মংলার ‘বন্দর চ্যানেল’ এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ।
বন্দর চ্যানেলে একের পর এক ডুবছে কার্গো, ডুবো চরে আটকা পড়ছে দেশি বিদেশী জাহাজ। গত ১৮ দিনে মংলা বন্দর চ্যানেলে ডুবে গেছে পন্য বোঝাই দুটি স্ক্রাপ কার্গো ও ফেয়ারওয়ে ১২ নম্বর বয়ার কাছে ডুবো চরে আটকা পড়েছে ফিলিপাইনের পতাকাবাহী জাহাজ এম.ভি তুফিমাদান।
এ অবস্থায় বন্দর চ্যানেলটি চরম ঝুকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। যে কোন সময়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে দেশের আমদানী – রপ্তানি বানিজ্যের দ্বিতীয় লাইফ লাইন আর্ন্তজাতিক মংলা বন্দর।
মঙ্গলবার বন্দর চ্যানেলে কার্গো ডুবির ঘটনায় বন্দরের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাইফুর রহমানকে প্রধান করে বুধবার তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়ছে। এ কমিটি দুঘটনার কারন অনুসন্ধান করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে রির্পোট দিতে বলা হয়েছে।
চলাচলে অনুপযোগী স্ক্রাপ কার্গো ও লাইটারেজ জাহাজের বিষটি উপর নজর রাখতে স্থানীয় কোস্টগার্ডকে দেখভালের জন্য জানিয়েছে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দর চ্যানেলে একের পর এক চলাচল অনোপযোগী স্ক্রাপ কার্গো ডুবির ঘটনায় মংলা বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
তবে, মংলা বন্দর চেয়ারম্যান কমোডর এম এইচ আর ভুইয়া বলেছেন, বন্দর চ্যানেলে ডুবে যাওয়া দুটি কার্গো জাহাজের অবস্থান সনাক্ত করে সেখানে মার্কিং করা হয়েছে। এতে বন্দরে আগমন ও নির্গমনে কোন সমস্যা হচ্ছে না।
মংলা বন্দর কতৃপক্ষের হারবার মাস্টার খান মোঃ আকতারুজ্জামান জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর সকালে মংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হারবাড়িয়া এলাকা থেকে চীনের পতাকাবাহী এম ভি তাইহাইহু জাহাজ থেকে ৬২০ মেট্রিকটন সিমেন্ট তৈরীর কাচামাল (ক্লিকার) বোঝাই করে খুলনা যাবার পথে পানামার পতাকাবাহী সিনো গ্রেস জাহাজের সাথে ধাক্কা লেগে তলা ফেটে বন্দর চ্যানেলে ডুবে যায় এমভি হাজেরা-১ নামের কার্গো জাহাজটি।
মংলা বন্দর কতৃপক্ষ ৭ দিনের মধ্যে কার্গো জাহাজটির মালিক বাদশা হাওলাদার কার্গোটি বন্দর চ্যানেল থেকে অপসারনের নির্দেশ দেন। অদ্যাবদি ডুবে যাওয়া ওই কার্গো জাহাজটি বন্দর চ্যানেল থেকে তোলা সম্বব হয়নি।
এঅবস্থার মধ্যে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে মংলা বন্দর চ্যানেলের জয়মনির ঘোলে বর্হিনঙ্গরে চীনের পতাকাবাহী এমভি হুয়াহাই জাহাজ থেকে ৬৫০ মেট্রিকটন ক্লিকার বোঝাই করে এমভি নয়নশ্রী -৩ কার্গোটি সেনা কল্যান সংস্থার সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর জেটিতে আসার পথে চুকানের চেইন ছিড়ে অন্য একটি জাহাজের উপরে আছড়ে পড়লে তলা ফেটে ঘটনাস্থলেই ডুবে যায়।
এই ডুবে যাওয়া দুটি কার্গোর অবস্থান নির্নয় করতে মংলা বন্দর কতৃপক্ষ নৌবাহিনীর সহায়তা নিয়ে মাকিং করতে সক্ষম হয়।
মংলা বন্দরে সার নিয়ে আসার পথে গত ২৯ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বঙ্গোপসাগরের সুন্দরবন উপকূলে ফেয়ারওয়ের ১২ নম্বার বয়া এলাকায় ডুবো চরে আটকে যায় ফিলিপাইনের পতাকাবাহী জাহাজ এম.ভি তুফিমাদান। চট্রগ্রাম থেকে মংলা বন্দরে আসার পথে সুন্দরবন উপকূলে বঙ্গোপসাগরে ফেয়ারওয়ে বয়ার কাছে দুঘটনায় পড়ে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মংলা বন্দরের উদ্ধারকারী জাহাজ এম,টি সারথি-২ আটকে পড়া ওই জাহাজটিকে উদ্ধার করতে পারেনি। লাইটারের মাধ্যমে মাল খালাসের কাজ চলছে জানান মংলা বন্দর কতৃপক্ষ।
মংলা বন্দর কতৃপক্ষের মেম্বর অপরেশন মোঃ আলতাফ হোসেন বিকেলে মুঠোফোনে জানান, বন্দর চ্যানেলে একের পর এক কার্গো ডুবির ঘটনায় বুধবার বন্দর ভবনে কার্গো ও লাইটারেজ জাহাজের মালিকসহ সংশ্লিস্টদের নিয়ে জরুরী বৈঠক করেছে।
তবে অন্য একটি সুত্রে জানা গেছে, মংলা বন্দরে পন্য খালাস ও পরিবহনে চলাচল অনুপযোগী অধিকাংশ স্ক্রাপ ও লাইটারেজ জাহাজের মালিকরা বৈঠকে অনুপস্থিত ছিল।
সার্বিক বিবেচনায় বন্দর চ্যানেল ঝুকিমুক্ত রাখতে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সকল স্টেক হোল্ডারদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
Bagerhat Info Largest Bagerhat Online Portal for Latest News, Blog, Informations & Many More