সেনা কল্যাণ সংস্থার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সেলিম জানান, ধ্বংসস্তূপে মোট সাতজনের লাশ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে মংলা শিল্প এলাকায় সেনা কল্যাণ সংস্থার মালিকানাধীন মংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরির নির্মাণাধীন ওই মিলিং হাউজের ছাদ ধসে পড়ার পর ফায়ার ব্রিগেড, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও পুলিশ সদস্যরা টানা প্রায় ২৪ ঘণ্টা সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চালান।
অভিযানে অংশ নেওয়া সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মো. সেলিম বলেন, “নতুন করে জীবিত বা মৃত কাউকে পাওয়া যায়নি। উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত।”
বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. শাহ আলম সরদার এবং ফায়ার সার্ভিসের খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান এ সময় তার পাশে ছিলেন।
এর আগে সকাল পৌনে ৯টার দিকে ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে মংলা থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফয়জুল এলাহী জানান। আগের দিন রাত ১১টা পর্যন্ত পাওয়া যায় ছয় শ্রমিকের মৃতদেহ।
নিহতদের মধ্যে ছয় শ্রমিকের পরিচয় মেলার পর তাদের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাগেরহাট জেলা প্রশাসন লাশ সৎকারের জন্য নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দিয়েছে।
এই ছয়জন হলেন- বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রাজনগর গ্রামের আনছার শেখ (৪৫), একই গ্রামের মাহরুফ হাওলাদার (৩৭),গৌরম্ভা গ্রামের আমীর আলী আকুঞ্জী (৩৫), খুলনা শহরের জাহিদুর রহমান সড়কের আল আমিন শেখ (৪০), সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া গ্রামের বাকি বিল্লাহ খান (২২) ও সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার বাইনতলা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম শেখ (৪২)।
আহত অবস্থায় উদ্ধার করা শ্রমিকদের মধ্যে ৩২ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পাঁচজনকে মংলা বন্দর হাসপাতাল ও আটজনকে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সম্পূর্ণ চিকিৎসা ব্যয় বহনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেনা কল্যাণ সংস্থার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তবে তিনি ক্ষতিপূরণের টাকার কোনো অংক বলেননি।
খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুস সামাদও আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ফারুক হোসনকে প্রধান করে ৯ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে।
এছাড়া সেনাকল্যাণ সংস্থাও এ ঘটনায় একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. সেলিম জানান।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ওই মিলিং হাউজের ছাদ ঢালাই শুরু হয়। ভবনটি প্রায় চার তলা ভবনের সমান উঁচু। শতাধিক শ্রমিক সে সময় কাজ করছিলেন।
“বেলা ১টার দিকে ঢালাই চলা অবস্থায় ছাদটি ধসে পড়ে। এতে বেশ কিছু শ্রমিক লোহার সেন্টারিং পাইপ, রড ও ঢালাই সামগ্রীর মধ্যে আটকা পড়েন।”
আহত শ্রমিক মাসুদ কাজী ও গোলাম মোস্তফা জানান, ছাদের ওপর মশলা (ইট-শুরকির ঢালাই) দেওয়া হচ্ছিল। কাজ অর্ধেকটার বেশি এগিয়েও গিয়েছিল। হঠাৎ করেই বিকট শব্দে সব কিছু ভেঙে পড়ে।
Bagerhat Info Largest Bagerhat Online Portal for Latest News, Blog, Informations & Many More