প্রচ্ছদ / খবর / মোল্লাহাটে খাদ্য গুদাম থেকে পাচারকৃত সাড়ে ৪শ বস্তা চাল ও গম উদ্ধার; কর্মকর্তা পলাতক

মোল্লাহাটে খাদ্য গুদাম থেকে পাচারকৃত সাড়ে ৪শ বস্তা চাল ও গম উদ্ধার; কর্মকর্তা পলাতক

BagerhatPhoto10.09.13মোল্ল‍াহাট থেকে ফিরে :
বাগেরহাটের মোল্ল‍াহাট উপজেলা গাড়ফা এলাকার এলএসডি  খাদ্য গুদাম থেকে পাচারকৃত ধান, চাল ও গমের মধ্যে এ পর্যন্ত সাড়ে চার’শ বস্তা চাল ও গম উদ্ধার করা হয়েছে। 
ঘটনার পর থেকে মোল্লাহাট খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মিলন কুমার মণ্ডল পলাতক রয়েছেন।
জেলা খাদ্য কর্মকর্তা এমদাদুর রহমান জানান, মোল্লাহাট খাদ্য গুদামে ৯৫৪.৭২ মেট্রিক টন চাল, ৬২৬.৯২১ মেট্রিক টন গম ও ২৬৪ মেট্রিক টন ধান মজুদ ছিল। সম্প্রতি ওই খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা মিলন কুমার মণ্ডলকে বাগেরহাট সদরে বদলি করা হয়। তার স্থলে নিয়োগ দেওয়া হয় এস এম খলিলুর রহমানকে।
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে  খাদ্য গুদামে সংরক্ষিত চাল খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে কালোবাজারে বিক্রির ঘটনা ঘটেছে।
সংরক্ষিত এই মালামালের অমিল দেখা দেওয়া সোমবার রাতে গুদাম সীলগালা করে পরিমাপের সময়ে এই অমিল ধরা পড়ে। পরে ধরাপড়ার ভয়ে ওই গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ফুড) মিলন কুমার মন্ডল সোমবার রাতে আধাঁরে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনায় মোল্লাহাট থানা পুলিশ এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসন মোল্লাহাট উপজেলার বিভিন্ন দোকানে ও চালেন গুদামে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে থেকে এ সব খাদ্য উদ্ধার করে।
এ সময়ে মোল্লাহাট বাজারের আব্দুল হাই মোল্লা, আক্তার শিকদারের দোকান ও বাড়ীসহ বিভিন্ন দোকান থেকে পুলিশ এদিন বিকাল পর্যন্ত সাড়ে ৪শ বস্তা চাল ও গম উদ্ধার করে।
এদিকে মোল্লাহাট খাদ্যগুদামের চাল খোওয়া যাওয়ার ঘটনায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট খান মোহাম্মদ রেজাউন নবী, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শাহ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ও খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মোল্লাহাটে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
চাল ও গম কালোবাজারে বিক্রির ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাদ্য গুদামের এক কর্মকর্তা বাগেরহাট ইনফোকে জানায়, প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন চাল ও গম কালোবাজারে বিক্রি করা হয়েছে।
এবিষয় মোল্লাহাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুবুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফোকে জানান, চাউল-ঘম খোয়া যাওয়ার ঘটনায় বাগেরহাট জেলা প্রশাসন ও খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে গোডাউনের চাল-গম ও ধানের পরিমাপ করা হচ্ছে।
এছাড়া উপজেলা প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরিমাপের পর কি পরিমান চাল-গম ও ধান খোয়া গেছে তা নিরুপন করা সম্ভব হবে।
মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ মো. খায়রুল আনাম জানান, খাদ্য গুদাম এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে।
জেলা খাদ্য কর্মকর্তএমদাদুর রহমান বাগেরহাট ইনফোকে জানান, মোল্লাহাট খাদ্য গুদামের ধান, চাল ও গম আত্মসৎ এর বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে এবং উপ-খাদ্য পরিদর্শক মিলন কুমারের বিরুদ্ধে মোল্লাহাট থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে।
মোল্লাহাটের কাহালপুর এলাকার কৃষক জবিরুল আলম পিরজের স্ত্রী বালা বেগম বাগেরহাট ইনফোকে জানান, তিনি খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মিলন কুমার মণ্ডলের কাছে ৯ মে. টন ধানের এক লাখ ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা, উপজেলার গাড়ফা এলাকা শামিম চৌধুরী ৩১ হাজার ৫০০ টাকা ও চিতলমারী উপজেলার বড়গুনি এলাকার মাসুদ এক লাখ ৫ হাজার টাকা পাবেন।
এছাড়া, স্থানীয় বুরো বাংলাদেশ এর মোল্লাহাট শাখা তাদের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণেরন কোন কিস্তিই পরিশোধ না করার অভিয়োগ করেছে।
ওই কর্মকর্তার পলায়নের খবর শুনে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

১০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ :: ইনজামামুল হক, নিউজ  করেসপন্ডেন্ট,
 বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।

About ইনফো ডেস্ক