যুদ্ধাপরাধের দায়ে আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসিকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের নাশকতার প্রতিবাদে বাগেরহাটে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মিছিল করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চ ও মুক্তিযোদ্ধার সংসদ সন্তান কমান্ড নামে একটি সংগঠন। এ মিছিলে কয়েকজনের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র।
‘নাশকতা প্রতিরোধ জনগণই করবে’ বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশা প্রকাশের একদিন পর বৃহস্পতিবার বাগেরহাট শহরে সশস্ত্র এই মিছিল করে সংগঠনটি।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয় থেকে বিক্ষেভি মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মীর শওকাত আলী বাদশা। তবে অস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়ে জানতে চাইলে, তার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না বলে দাবি করেছেন তিনি।
এব্যপারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান বাদশা বলেন, তাদের মিছিলে যে ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল, তার সবগুলোই বৈধ এবং এগুলো বৈধ মালিকদের হাতেই ছিল।
অস্ত্র প্রদর্শনের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের নাক গলানোর দুঃসাহস ও এদেশে তাদের দোসরদের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এটা ছিল একটি প্রতীকী প্রদর্শন। আমরা তাদের বোঝাতে চেয়েছি যে, মুক্তিযোদ্ধারা এখনো অস্ত্র হাতে তাদের মোকাবেলা করতে প্রস্তুত।”
তবে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) নিজামুল হক মোল্যা বলেছেন, “আগ্নেয়াস্ত্র বৈধ হলেও কোনো অবস্থাতেই তা প্রকাশ্যে প্রদর্শন করা যায় না।”
প্রসংগত, কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর নাশকতার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়। এতে নিহত হন কয়েক জন। এরমধ্যেই দণ্ডিত জামায়াত নেতার পক্ষে পাকিস্তান পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস হয়।
ওই প্রস্তাব নিয়ে দেশজুড়ে যখন প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, তখন বৃহস্পতিবার সকালে বাগেরহাট জেলা শহরে চারটি একনলা ও দোনলা বন্দুক হাতে জামায়াতবিরোধী এই মিছিল বের হয়।
মিছিল থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত সবার ফাঁসির রায় বাস্তবায়ন ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তোলা হয়।
মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাথেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের জেলা কমিটির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা শেখ শওকত হোসেন, সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান বাদশা, সদর থানা কমিটির সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা শেখ হেমায়েত হোসেন, বাগেরহাট মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মাসুম হাওলাদার।
এতে বক্তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপের নিন্দা জানান।
এদিকে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়ে সংসদ সদস্য মীর শওকাত আলী বাদশার কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “বিক্ষোভ মিছিল আহ্বানকারীরা কেন অস্ত্র বহন করেছেন, তা আমার জানা নে। আমি বলতে পারব না। আমি ঘটনাচক্রে সেখানে অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছিলাম মাত্র।”
পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা জানান, মুক্তিযোদ্ধারা শহরে মিছিল করেছে বলে জানলেও আগ্নেয়াস্ত্র বহনের বিষয়ে কিছু জানান নেই।
বিষয়টি জানানোর পর তিনি বলেন, “আমি তদন্ত করে দেখব।”
১৮ ডিসেম্বর ২০১৩ :: নিউজ ডেস্ক,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
সূত্র:বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
Bagerhat Info Largest Bagerhat Online Portal for Latest News, Blog, Informations & Many More
