সোমবার দুপুর ২টা বাগেরহাটে শুরু হওয়া তিন দিন ব্যাপি ডিজিটাল উদ্ভাবনী ও বিজ্ঞান মেলা ‘১৪ এর শেষ দিন। কথা হচ্ছিল মেলায় ঘুরতে আসা বাগেরহাট বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ফারিয়া আক্তারের সাথে। অনেক সময় নিয়ে সে প্রতিটি স্টল খুঁটিয়ে দেখছিল অবাক চোখে। কী যেন একটা সে খুঁজছিল কিন্তু পাচ্ছিল না।
জিজ্ঞাসা করতে ফারিয়ার প্রশ্ন, ‘এত কম্পিউটার! কিন্তু আমরা তো ব্যবহার করতে পারছি না। এখানে গেম খেলার ব্যবস্থা নেই?’ আবার স্কুল-কলেজের অনেক শিক্ষার্থীই বলেছে, মেলায় কেউ তো কিছু শেখাল না। কম্পিউটার ধরতেও দিল না কেউ।
মেলায় শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২০টি এবং উন্নয়ন সহযোগী (এনজিও) এবং সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের ২০টি স্টল অংশ গ্রহণ করে।
সকারের রুপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সস টু ইনফরমেশন (a2i) এর সহযোগিতায় শনিবার থেকে জেলা প্রশাসন তিন দিন ব্যাপি এ মেলার আয়জন করে।
এ মেলায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিই বেশি দেখা গেছে। তবে মেলা তাদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি।
প্রতিটি স্টলে ব্যবহূত কম্পিউটার, প্রজেক্টর, প্রিন্টার তাদের আকৃষ্ট করেছে। কিন্তু নিজের হাতে কম্পিউটার নাড়াচাড়া করা, গেমস খেলা বা ইন্টারনেট ব্যবহারের কোনো সুযোগ রাখেনি স্টলগুলো।
মেলায় অংশগ্রহণকারী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের সাজানো কর্মসূচিতে আমরা নির্দেশিত হয়ে অংশ নিই। ফলে প্রতিযোগিতা বা উদ্ভাবনী কিছু করার সুযোগ থাকে না।’
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ডাক বিভাগ বা বিটিসিএলের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর স্টলে নিজেদের ব্যবহূত কম্পিউটার ও অন্যান্য প্রযুক্তি প্রদর্শন করাটাই যেন ছিল মুখ্য। উপজেলা ও ইউনিয়ন তথ্যসেবাকেন্দ্র এবং বেসরকারি সংগঠনগুলো তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া তথ্যসেবা ও সুযোগগুলো প্রচারে সচেষ্ট ছিল।
মেলায় অংশগ্রহণকারী একটি প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম ছিল মেলার প্রাণ। কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা তাদের আরও মনোযোগী করতে পারত। এটা ডিজিটাল মেলা ছিল ঠিকই, তবে এখানে উদ্ভাবনী কিছু ছিল না।’
বিজ্ঞান মেলাতেও ছিল একই চিত্র। অধিক অংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোই অংশ নিয়েছিল শুধু মাত্র অংশ গ্রহণের জন্য। বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানাগারে থাকা বিভিন্ন দ্রবাদিই ছিল বিজ্ঞান মেলার উদ্ভাবণ।
তবে মেলার আয়জক বাগেরহাটের জেলা প্রশাসনের দাবি ‘অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে যথেষ্ট ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল কম্পিউটারে তৈরি ডিজিটাল কনটেন্ট বা সেবাসুবিধাগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরা। আমরা সেটা করেছি। তাই মেলায় শিশু-কিশোরদের কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়নি।’
সোববার বিকালে বাগেরহাট স্বাধীনতা উদ্যান প্রাঙ্গনে মেলার সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন তথ্য ও যোগাগোগ প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম খান।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু. শুকুর আলীর সভাপতিত্বে উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আতিরুক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাবিবুল হক খান, আতিরুক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শাহ আলম সরদার, প্রফেস বুলবুল কবির প্রমুখ।
Bagerhat Info Largest Bagerhat Online Portal for Latest News, Blog, Informations & Many More