প্রচ্ছদ / খবর / বাংলাদেশ থেকে মাটি ও বালু নিতে আগ্রহী মালদ্বীপ

বাংলাদেশ থেকে মাটি ও বালু নিতে আগ্রহী মালদ্বীপ

Mongla-GhosiKhali-Pic‘বাংলাদেশ থেকে মাটি ও বালু নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ।’

এ ক্ষেত্রে দেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক নৌরুট মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পাওয়া মাটি ও বালু রফতানির ভাবনা সরকারের। এ বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনাও শুরু হয়েছে।

এরই মধ্যে বাগেরহাটের মংলা-ঘষিয়াখালী নৌ-চ্যানেল ঘুরে গেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মালদ্বীপের হাই কমিশনার ড. মোহাম্মদ অসীম। খনন করা মাটির ধরণ ও গুণাগুণ পরীক্ষা এবং মালদ্বীপে এই মাটির চাহিদা আছে কি না- সে বিষয়ে জানতেও শুরু হয়েছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

মংলা-ঘষিয়াখালী নৌ-রুটের সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন করে এমন তথ্য জানিয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে মাটি ও বালু নিতে চায় মালদ্বীপ। আমারা মালদ্বীপের হাই কমিশনাকে দেখালাম আমাদের কোন কোন মাটি আছে এখানে। পরীক্ষার জন্য মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যালেন থেকে খননকৃত ২০ থেকে ৩০টি পয়েন্টের মাটির নমুনা সংগ্রহ করেছি। এগুলো ল্যাবে (পরীক্ষাগারে) পরীক্ষা করা হবে এবং পরে রিপোর্ট মালদ্বীপের হাই কমিমনার ড. মোহম্মদ অসীমের মাধ্যমে সেদেশে পাঠানো হবে।

Bagerhat-Pic-1(09-03-2016)খননকৃত মাটি রফতানির বিষয়ে নৌ পরিবহন সচিব আরও বলেন, মালদ্বীপ যদি মনে করেন যে- এটা (এখানকার মাটি) সুইটেবল হবে, তখন আলাপ আলোচনার মধ্যমে ঠিক করা হবে কিভাবে বাংলাদেশ মাটি রফতানি করবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডাব্লিটিএ সূত্র মতে, উত্তরে হিমালয় এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর হওয়ায় দেশের প্রায় সব নদ-নদীর প্রবাহ উত্তর-দক্ষিণে। কিন্তু মংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ পথটি পূর্ব পশ্চিমমুখী। যার একপাশে পশুর নদী এবং অন্য পাশে বলেশ্বর নদী।

বিআইডাব্লটি’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ড্রেজিং) এ এইচ ফরহাদ-উজ-জামান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলে জেয়ারের সময় পশুর ও বলেশ্বর দু’দিক দিয়ে স্রোত আসে। আবার ভাটার সময় দু’দিক পানির টান থাকায় চ্যানেলে দ্রুত পলি জমে ভরাট হচ্ছে।

২০১৪ সালে জুনে শুরু হওয়া ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে খনন কাজে ২৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ কোটি ২৫ লাখ কিউবিক মিটার মাটি খনন করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত পলি জমার কারণে চ্যানেলের ত্রিশ থেকে চল্লিশ ভাগ আবার ভরাট হয়ে যাচ্ছে।

পলি জমার হার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতি বছর এই চ্যানেলে প্রায় অর্ধ কোটি ঘন মিটার পলি জমে। যার জন্য মাত্র তিন মাসেই চ্যানেলে একের তিন ভাগ ভরাট হয়ে যেতে পারে। তাই সারা বছর নাব্য রাখতে চ্যানেল সংলগ্ন ছোট বড় নদী-খালগুলোকে নাব্য রাখার পাশাপশি সারা বছর ড্রেজিং প্রয়োজন।

DaudKhali-River-Digging-Pic-2(16-04-‎2015)এক্ষেত্রে খননকৃত মাটি রাখা এখন এই অঞ্চলে একটি বড় সমস্যা। এজন্য এই মাটির বিষয়ে বিআইডাব্লটিএ বিভিন্ন সময়ে কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় মালদ্বীপের সঙ্গে মাটি রফতানির এই প্রাথমিক আলোচনা।

বুধবার (০৯ মার্চ) মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল পরিদর্শনের সময় মালদ্বীপের হাই কমিমনার ড. মোহম্মদ অসীমের সঙ্গে ছিলেন, বাংলাদেশের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, বিআইডব্লিউটি’র চেয়ারম্যান কমডোর মোজাম্মেল হক, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী শ্যামা প্রসাদ অধিকারীসহ স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনরা।

এর আগে বিভিন্ন সময় মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশ থেকে বালু আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছিলো।

১০ মার্চ :: স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
এস/আইএইচ/এনআরএ/বিআই

About বাগেরহাট ইনফো নিউজ