প্রচ্ছদ / খবর / আত্মসমর্পণ করা ‘মাস্টার বাহিনী’র সদস্যরা কারাগারে

আত্মসমর্পণ করা ‘মাস্টার বাহিনী’র সদস্যরা কারাগারে

অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মংলা থানার দুটি মামলায় বুধবার (১ জুন) বিকালে বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (রামপাল-মংলা) আদালত – ২ এ তোলা হয় তাদের।

আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে, মঙ্গলবার বিকালে এই দশ জন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেন।

ওই সময় মন্ত্রী তাদের আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।

মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমান জানান, আত্নসমর্পণ করা দস্যুরা র‌্যাব-৪ এর কাছে ৫২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিভিন্ন ধরনের প্রায় পাঁচ হাজার গুলি জমা দেয়। মংলা বন্দরের বিএফডিসি (ফুয়েল) জেটিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মসমর্পণের পর র‌্যাব তাদের থানায় হস্তান্তর করে।

Sundorbon roversএ ঘটনায় র‌্যাব-৮ এর উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) মো. হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে দুটি মামলাও করা হয়। বিকালে ওই মামলায় বাগেরহাট বিচারিক আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠান।

এদিকে সুন্দরবনকে দস্যু মুক্ত করতে অন্যান্য বাহিনীগুলোকেও এই প্রক্রিযায় আনতে এবং যাদের মাধ্যমে দস্যুতার বিস্তার ঘটছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন উপকূলের জেলেরা।

ফিসিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, গত দুই বছর ধরে বনদস্যু মাস্টার বাহিনীর অব্যাহত চাঁদাবাজিতে জেলেরা ছিল অতীষ্ঠ। বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, রামপাল ও মংলা উপজেলার ট্রলার মালিক ও জেলেদের কাছ থেকে মাস্টার বাহিনী কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেছে।

“এই বাহিনী আত্নসমর্পণ করায় জেলে সম্প্রদায় দারুণ খুশি হয়েছে; কিন্তু সুন্দরবন ও সাগরে অন্য যে বাহিনীগুলো সক্রিয় আছে তাদেরকেও হয় আত্নসমর্পণ করাতে হবে অথবা গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলে আমরা নিরাপদে কাজ করতে পারব।”

Bagerhat-SB-Doshu-Salender-Pic-ব্যাব-৮ এর উপ অধিনায়ক মেজর আদনান কবির বলেন, বনদস্যু মাস্টার বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৩৫/৪০ জন। সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগে এই বাহিনীটির শক্ত অবস্থান ছিল। সুন্দরবন ও সাগরের উপর নির্ভরশীল জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালদের কাছ থেকে টোকেন দিয়ে চাঁদা আদায়, মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ ও ডাকাতি ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।

জেলে ও বনজীবীরা দাবিকৃত টাকা না দিলে দস্যুরা নির্যাতন চালাত উল্লেখ করে এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, মাস্টার বাহিনীর বিরুদ্ধে বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও বরগুনার বিভিন্ন থানায় অন্তত অর্ধশত মামলা রয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্নসমর্পণ অনুষ্ঠানে আত্মশুদ্ধি করে মাষ্টার বাহিনীর মতো অন্য দস্যুদেরও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন আসাদুজ্জামান খাঁর কামাল বলেন, তারা যদি ভয়ঙ্কর পথ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায় তাহলে সরকার তাদের সব ধরনের আইনী সহায়তা দেবে। আর তারা যদি বনে দস্যুবৃত্তি করতে চায় তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কঠোর হাতে দমন করতে ব্যবস্থা নেবে।

এজি/এসআই/বিআই/০১ জুন, ২০১৬

About বাগেরহাট ইনফো নিউজ