প্রচ্ছদ / খবর / জোয়ার দুইশতাধিক বসতবাড়ি প্লাবিত

জোয়ার দুইশতাধিক বসতবাড়ি প্লাবিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম

আমাবস্যার জোয়ারে ভৈরব নদের পানি বাড়ায় পুরতন রুপসা-বাগেরহাট সড়ক উপচে প্লাবিত হচ্ছে লোকালয়। সোমবার, ১৬ জুলাই ২০১৮। রহিমাবাদ ভাঙ্গড়, সদর উপজেলা, বাগেরহাট। । – bagerhatinfo.com

Posted by bagerhatinfo.com on Monday, July 16, 2018

আমাবশ্যার জোয়ারে ভৈরব নদের অস্বাভাবিক পানি বাড়ায় সড়ক উপচে প্লাবিত হচ্ছে বাগেরহাট সদরের চারটি গ্রামের অন্তত দুইশতাধিক ঘরবাড়ি। দিনে দুই বার জোয়ারের সময় নদের পানি পুরতন রুপসা-বাগেরহাট সড়ক উপচে ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে।

এতে তলিয়ে যাচ্ছে উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের রহিমাবাদ, কাড়াপাড়া ইউনিয়নের মগরা, রাজাপুর ও পোলঘাট এলাকার বসতবড়ি, মাছের ঘের, পানের বরজ।

এদিকে জোয়ারের চাপে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে পুরতন-রুপসা বাগেরহাট সড়কের রহিমাবাদ ভাঙ্গড় পাড় ও মুচিঘাট এলাকায়। এতে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কটি নদে বিলিন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রহিমাবাদ গ্রামের বাসিন্দা বেগ জিহাদুল হক খোকন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, গত ৫ দিন ধরে জোয়ারের সময় নদের পানি সড়ক উপচে গ্রামে ঢুকে পড়ছে। সবকিছু তলিয়ে গেছে। রোববার দুপুরে জোয়ারের সময় স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে পানির তোড়ে ভেসে যায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী। ওই শিশুটির অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন।

‘অবস্থা এমন যে, গ্রামে কেউ মারা গেলে এখন তাঁর লাশটাও দাফন করার মত কোন জায়গা নেই। রান্না-খাওয়ারও কোন উপায় নেই। আমরা গরিব মানুষ। সরকার দয়া করে এই ভাঙন রোধ করে একটা বাঁধ দিয়ে আমার বাঁচার একটা ব্যবস্থা করুক। নইলে কোথায় যাবো আমরা?’

রোববার জোয়ারের সময় পানির তোড়ে ভেসে যাওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম উম্মে হাবিবা। তাঁর মা লাকি বেগম জানান, রাস্তার উপর দিয়ে প্রচণ্ড স্রোতে জোয়ারের পানি ঢুকছিল। এ সময় পা পিছলে পড়ে গেলে স্রোতে তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।

জোয়ারে ভৈরব নদের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে বাগেরহাট সদর উপজেলার রহিমাবাদ এলাকা। – bagerhatinfo.com

Posted by bagerhatinfo.com on Monday, July 16, 2018

বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মশিউর রহমান বলেন, আশঙ্কাজনক হওয়ায় শিশুটিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মতিন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, গত ৫ বছর ধরে এই অবস্থা। বর্ষা মৌসুমে আমাবশ্যা-পুর্নিমায় সড়ক উপচে গ্রামগুলো প্লাবিত হচ্ছে। আমরা বারবার বিভিন্ন দপ্তরে গেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলে সড়কের কাজ, সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ। কেউই এখানে কাজ করছে না।

এখানে ভাঙন রোধে স্থায়ী ও উঁচু বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি। তা না হলে এই সড়কটিও টিকবে না। গ্রামগুলোও প্লাবিত হবে প্রতি জোয়ারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাওবো) বাগেরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ওই এলাকাটি পাওবো’র পোল্ডারের বাইরে। সড়ক বিভাগের রাস্তাটিই এখানে বাঁধের মত জোয়ারের পানি প্রতিরোধ করে। প্লাবন ঢেকাতে ওই সড়কটি উঁচু করা প্রয়োজন। তা না হলে জোয়ারের পানি ঠেকানো যাবে না।

সড়কের দুটি অংশে ভাঙন ঠেকাতে গত ক’বছর জরুরি ভিত্তিতে কিছু কাজ হয়েছে। তবে এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন। এ জন্য যাত্রাপুর সংলগ্ন মুচিঘাট ও রহিমাবাদের ভাঙ্গড় এলাকায় মোট চারশ’ মিটার রিং বাঁধ নির্মণের জন্য আমরা একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। তবে অর্থ ছাড় না হওয়ায় ওই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।

এইচ//এসআই/বিআই/১৬ জুলাই ২০১৮

About বাগেরহাট ইনফো নিউজ