প্রচ্ছদ / আরও... / কমলা মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণ ও ঘের/পুকুর পাড়ে চাষের সম্ভাবনা

কমলা মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণ ও ঘের/পুকুর পাড়ে চাষের সম্ভাবনা

OSP-Publication-WorldFishশিশু, কিশোর-কিশোরী, গর্ভবতী এবং দুগ্ধদানকারী নারীদের অণুপুষ্টির চাহিদা মিটাতে সহজলভ্য কমলা মিষ্টি আলু (বারি এসপি ৪) দৈনন্দিন খাবার তালিকায় রাখলে অণুপুষ্টির চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হয়ে থাকে।

  • কমলা মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমান ভিটামিন এ,সি ও খনিজ পদার্থ আছে।
  • এ আলুর পাতা ভিটামিন এ,বি ও সি’র উৎস্য।
  • ১২৫ গ্রাম মিষ্টি আলু একটি শিশুর প্রতিদিনের ভিটামিন এ এর চাহিদা পূরণ করতে পারে।
  • হাড় ও দাতের ক্ষয়রোধ ও মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।
  • রক্তে লোহিত কনিকা তৈরীতে সাহায্য করে।

কমলা মিষ্টি আলুর চাষ পদ্ধতিঃ

ঘের/পুকুর পাড়ে সাধারণত: সবসময় রৌদ্রের আলো পড়ে এবং পানি সেচের সুবিধা থাকে বিধায় ঘের/পুকুর পাড়ে কমলা মিষ্টি আলু চাষের জন্য নির্বাচন করা যায়।

বেলে-দোআঁশ মাটিতে এ আলুর উৎপাদন ভালো হয়। তবে ভালো ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সব ধরনের মাটিতে কমলা মিষ্টি আলু চাষ করা যায়। সর্বোচ্চ পরিমান শর্করা জমা ও আলুর লতার উত্তম বৃদ্ধির জন্য সাধারণত: ২২-২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়।

  • অক্টোবর-নভেম্বর (কার্তিক) মাস বিশেষ করে ০১-১৫ নভেম্বর পর্যন্ত কমলা মিষ্টি আলুর লতা / কাটিং রোপনের উত্তম সময়। মিষ্টি আলুর লতার মাথা থেকে ১ম, ২য়, ও ৩য় খন্ড রোপন করা উচিত।
  • কার্তিক মাসে প্রতি শতাংশে ২২০-২৪০ টি কাটিং রোপন করতে হবে; যার প্রতিটি কাটিং ৩-৫টি গীট যুক্ত ১০-১২ ইঞ্চি লম্বা হলে ভালো হয়।
  • জমি তৈরিতে শতাংশ প্রতি ৩০-৪০ কেজি পচা গোবর, ৩০০-৩৫০ গ্রাম টি,এস,পি এবং ৩০০-৩৭৫ গ্রাম এমওপি সার ভালোভাবে মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে।
  • রোপনের সময় ২-৩ টি গীট মাটির নীচে ও ১-২ টি গীট মাটির উপরে রেখে রোপন করতে হয়।
  • সারি থেকে সারির দূরত্ব ২ ফুট ও কাটিং থেকে কাটিং এর দুরত্ব ১ ফুট এবং রোপনের ১-২ দিন পর সেচ দেওয়া যাবে। কাটিং রোপনের ৩০-৩৫ দিন পর ইউরিয়া ৩০০-৩৫০ গ্রাম ও এমওপি সার ৩০০-৩৭৫ গ্রাম প্রয়োগ করতে হবে।

শাক ও মিষ্টি আলু এবং কাটিং সংগ্রহঃ

লতা রোপনের ৭০-৮০ দিন পর হতে আলু সংগ্রহের পূর্ব পর্যন্ত (ফাল্গুন-চৈত্র মাস) শাক সংগ্রহ করা যায়্ । চারা রোপনের ১২০-১৩০ দিনের মধ্যে মিষ্টি আলু সংগ্রহ করা যায়। পরবর্তী ফসলের কাটিং উৎপাদনের জন্য আলু সংগ্রহের পূর্বেই লতার কাটিং তৈরী করতে হবে।

ইউএসএআইডি এর অর্থায়নে ওয়ার্ল্ডফিস-এআইএন প্রকল্প ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী, ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও সদর উপজেলায় ২৩৬ জন ঘের/পুকুর চাষীকে কমলা মিষ্টি আলুর ১০০টি করে কাটিং বিতরন করে এবং মৌসুম শেষে প্রতিজন চাষী আধা শতাংশ জমি হতে গড়ে ১৭ কেজি শাক ও ৫২ কেজি কমলা মিষ্টি আলু উৎপাদন করে।

লেখকঃ
কৃষিবিদ এবিএম শাহিদুল হক,
টেকনিক্যাল স্পেশালিষ্ট, এআইএন প্রকল্প, ওয়ার্ল্ডফিস-বাংলাদেশ, বাগেরহাট।
০১৭১২-৫৪০৭৬০

About Bagerhat Info Blog