হাজারিকার সোনার কণ্ঠ

You-will-never-love-anything-if

মানবের পৃথিবী দানবের হাতে কতকাল হবে কলুষিত
কেউ ধরেনা হাত চির উপেক্ষিত দুর্বলের।
সূর্যদীপ্ত তেজে জীবনের অনন্ত জিজ্ঞাসায়
গরব কণ্ঠে মাথায় পড়লে মানবতার উজ্জ্বল মুকুট।
‘গীতাঞ্জলি’ ‘অগ্নিবীনা’ দিয়ে বন্ধুর পথে
চোখের তারায় জ্বালালে হাজার সূর্যের আলো।
গংগায় পদ্মায় এক হয়ে গেছে তোমার শানিত চেতনা
তুমিই তোমার তুলনা।
আমাদের জন্মান্ধ যৌবনে
মৌনতার সূতোয় বোনা রঙিন চাঁদর এনে
তুমি দিয়েছিলে ভালবাসার আদর।
সাদা কালোর অহেতুক দ্বন্দ্বে ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতার মঞ্চে
উদার আকাশের হাত ছানিতে সম্বিৎ ফেরালে দাম্ভিক দ্বিপদীর।
বিস্তীর্ন দুপারের মানুষের হাহাকারে উদ্বেলিত
তুমি প্রত্যয়ের ভাস্কর সহস্র বর্ষার উন্মাদনা নিয়ে শোনালে
সমাজ ভাঙার গান।
কে আর লিখবে খোলা চিঠি শরৎ বাবুকে
কে আর নেবে খবর অর্ধভূখ গফুর মহেশ আমিনার
কে আর করবে প্রশ্ন স্বদেশী বর্গীর নির্লজ্জ লুণ্ঠণে
কেন সবাই নির্বিকার ?
বিশ্বপথিক তুমি দিব্য চোখে দেখেছিলে বঞ্চিতের যন্ত্রণা
ভলগা গংগা মিসিসিপি থেকে নায়েগ্রা হিমালয় ঘুড়ে
গগন চুম্বী অট্টালিকার পাশে গৃহহীনদের যন্ত্রণার আগুনে
পুড়ে খাঁটি হয়েছিলে হে প্রিয়তম যাযাবর।
তোমার মহাযাত্রায়
একটি গম্বুজ ধ্বসে গেল মানবতার
ছিঁড়ে গেল হৃদয়ের তার
তোমার কণ্ঠ অযুত নিযুত কণ্ঠে গর্জে উঠুক বারবার।

___ছবি: ওয়েব থেকে সংগ্রহিত.

About Poet Badruddoza

বর্ণিল নার্সারী, আমড়া, সুপারি, পেয়ারা, সারিসারি কাঠ ও জালের মত ছড়িয়ে থাকা নদী খালের পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি বর্তমান নেছারাবাদ উপজেলার আউরিয়া গ্রামে ১৯৬৬ সালের ১০ এপ্রিল কবি ও প্রাবন্ধিক মুহম্মদ বদরুদ্দোজা জন্মগ্রহণ করেন। ভাষা সৈনিক, শিক্ষাবিদ মোঃ হাবিবুল্লাহ তাঁর পিতা, শিক্ষিকা যোবেদা খাতুন তার মাতা। তিনি তার পিতামাতার গর্বিত জমজ সন্তান। তার অপর ভাই মোরশেদ তোহা বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগে অফিসার পদে কর্মরত। ছেলেবেলা থেকেই সাহিত্য-সংস্কৃতি ও অসাম্প্রদায়িক আবহে বেড়ে ওঠেন তিনি বি.এস.এস.(সম্মান) এম.এস.এস; এল.এল.বি, সার্টিফিকেট কোর্স ইন ইংলিশ, এম.এ (ইংরেজি) ১ম পর্ব উত্তীর্ন কর্মজীবন শুরু করেন ঢাকা বারে আইনজীবি হিসেবে। অতঃপরজেলার হিসেবে বিভিন্ন জেলা কারাগারে দায়িত্বপালন করে বর্তমানে বাগেরহাট জেলা কারাগারে কর্মরত আছেন। পেশাগত ব্যস্ততার মাঝেও সাহিত্য চর্চা অব্যাহত রেখেছেন। বাংলাদেশ ও ভারতের নির্বাচিত লেখকদের নিয়ে প্রকাশিত ২৫টি যৌথ গ্রন্থে ও প্রচুর পত্রিকায় তাঁর লেখা স্থান পেয়েছে। এ যাবৎ তাঁর ৩টি কাব্য ও ২টি প্রবন্ধ গ্রন্থ প্রকাশ হয়েছে। যথাক্রমে-১) নোঙর ফেলে যাই(কাব্য), ২) হৃদয় ছুঁয়ে যাই, (প্রবন্ধ) ৩) জীবন সেতো শুদ্ধ কবিতা (কাব্য), ৪) আলোকিত জীবন (প্রবন্ধ), ৫) ফিরে আসি ফিরে যাই (কাব্য)। দেশের বরেণ্য কবিদের কবিতা নিয়ে বৈশাখের নির্বাচিত কবিতা সংকলন ‘আমের মঞ্জরী’ প্রকাশ করে তিনি বৈশাখী কবিতা প্রেমীদের হৃদয় কেড়েছেন। বাংলা একাডেমী, ঢাকার সম্মানিত সদস্য, এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর সহযোগী সদস্য। বাংলাদেশ কবিতা সংসদ, প্রধান কার্যালয়, পাবনা ও উত্তর বাঙলা সংস্কৃতি পরিষদ, কেন্দ্রীয় কার্যালয়, পাবনা সহ নানা সংগঠনের সম্মানিত আজীবন সদস্য। প্রতিভার স্বীকৃতি স্বরূপ নির্ণয় শিল্পী গোষ্ঠী, ফরিদপুর থেকে ১টি স্বর্ণপদক, আসাম ভারত থেকে ‘বিপিন চক্রবর্তী স্মৃতি সম্মাননা’১০, সার্ক কালচারাল ফোরাম, ভারত থেকে সম্মাননা-১২ সহ বাংলাদেশ, ভারত থেকে ২০টি সাহিত্য পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন। আবৃত্তি ও উপস্থাপনায় তাঁর দক্ষতা রয়েছে। তিনি নির্মোহ ও আত্মপ্রচার বিমুখ প্রতিভা। সৃষ্টিতেই আনন্দ খোঁজেন। অদম্য প্রাণশক্তি, প্রবল উচ্চাশা ও কঠোর অধ্যবসায় তাঁর চালিকাশক্তি। মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তা চর্চায় শ্রদ্ধাশীল। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন বিষয়ক গবেষণা কর্মে তাঁর বিপুল আগ্রহ।