প্রচ্ছদ / লেখালেখি / মুক্তবাক / প্রাইভেট ভার্সিটিতে শিক্ষা বাণিজ্যিকরণ

প্রাইভেট ভার্সিটিতে শিক্ষা বাণিজ্যিকরণ

• মেহেদী হাসান সোহেল

Educationছাত্রদের আন্দোলনের নীতিগত সমর্থন রেখে বলছি শুধু ভ্যাট (VAT) বাদ দিলে কি আমাদের মধ্যবিত্তের ছেলে মেয়েদের বাবা-মার কষ্ট লাগব হবে। আর কি কোন দাবি ছিল না আমাদের? অনেক জ্ঞ্যানী গুনীরা বলেছেন, ভ্যাট আরোপ করে শিক্ষাকে পণ্যে রূপান্তরিত করেছে। আসলে কি তাই? না কি এটা আগে থেকেই পন্য হয়ে গেছে।

সব প্রাইভেট ভার্সিটি বলে তারা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। তবে সরকার বলার সাথে সাথে ভ্যাট ফেরত দেবার কথা বলল কিভাবে? তারা কি নিজেদের পকেট থেকে এ টাকা দিবে? না লাভের অংশ থেকে দিবে?

থুক্কু এরাতো ‘অলাভজনক’ প্রতিষ্ঠান, তাহলে ভ্যাট পকেট থেকে দিয়েছে। তবে কার পকেট থেকে ভ্যাট দিল তা না বললে এটাকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বলা যাবে না। এতদিন কি তারা মিথ্যা বলছে? তাহলে এই মিথ্যাবাদীদের প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমরা কি শিখেছি বা তোমরা কি শিখবা। তাই এসব প্রতিষ্ঠানের ছেলে-মেয়েদের কাছে অশোভন স্লোগান স্বাভাবিক ভাবে শোভা পাবে। আমার বোন একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে চাকরি করে। সে তার বেতন নিয়ে খুবী অসন্তুষ্ট। তাহলে প্রতিবছর যে টিউশন ফি বাড়ে এটা যায় কোথায়? ওনারো তো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।

বাড়তি টাকা নিশ্চই লাভ হিসেবে নেন না। তাহলে বাড়তি টাকা ওনারা কোন মায়ের ভোগে দেন। এসব কথা জানার অধিকার কি ছাত্রদের নাই। না কি এসব কথা জানার জন্য আন্দোলন করার দরকার ছিল? না ভার্সিটি কতৃপক্ষেরই উচিৎ প্রতিবছর ছাত্রদের সামনে আয়-ব্যয় এর হিসাব প্রকাশ করা। কারণ শিক্ষাতো পন্য হতে পারে না। অনেকে জ্ঞ্যানী একথা বলে সরকারকে তুলোধোনা করে দিয়েছে। যদিও তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকদের পেইড জ্ঞ্যানপাপী বলে পুরো সত্য বলেন না। অর্ধ সত্য তো সমাজের জন্য ক্ষতিকর।

সর্বশেষ গতকাল বিকালে এনবিআর ভ্যাটের নতুন সংজ্ঞা দিল যা শুনে আমি নিজে পুরা মালে পরিনত হয়ে গেলাম।
আর এই আন্দোলন দেখে বিরোধী দল রঙিন স্বপ্নে বিভোর হয়ে গিয়েছিল। মানে, হালে পানি এসেছিল কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিল ফার্মের মুরগী দিয়ে রোস্ট হয় না।

সরকারের কাছে আকুল আবেদন শিক্ষা-কে এইসব ধাপ্পাবাজ ও সুদখোরদের হাত থেকের বাঁচান। ভ্যাট প্রদান করলেও এদের কর্ম হালাল হবে না।

আমাদের প্রাইভেট ভার্সিটির ছাত্ররা আন্দোলন করতে পারে না এটা যেমন সত্য তেমনি আপনারা মানে সরকার মহাশয়রা ভাল করে জানেন যে প্রাইভেট ভার্সিটির কোন বেতন কাঠামো নাই। সোজাকথা তারা হরিলুট করছে। কেউ কথা বলতে পারছেনা কারন আপনাদের দলের হোমরা-চোমরাদের ট্রাস্টি বোর্ডে বসিয়ে রেখেছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পড়াশুনা শেষে চাকরী পাবে কিনা তার নিশ্চয়তা নাই। তারপর ওদের বাবা-মা যদি এই যাঁতাকলে পরে নিষ্পেষিত হয় তাহলে আমরা জনতা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলি। আপনি চাইলে দুদিনে একটি কাঠামো করা সম্ভব যার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারে। তবে মাল সাহেবকে এই দায়িত্ব দিয়েন না কারন ওনার বয়স হয়ে গেছে।

লেখক: বেসরকরি চাকুরিজীবী।
E-mail: mehdee19@gmail.com
স্বত্ব ও দায় লেখকের…

About মেহেদী হাসান সোহেল