প্রচ্ছদ / খবর / ত্রাণ না পেয়ে প্রতিবাদ করায় হামলা, ১৩ বাড়ি ‘ভাঙচুর-লুট’

ত্রাণ না পেয়ে প্রতিবাদ করায় হামলা, ১৩ বাড়ি ‘ভাঙচুর-লুট’

বিশেষ প্রতিনিধি, বাগেরহাট ইনফো ডটকম

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঝুঁকিতে বাগেরহাটে অবরুদ্ধ অবস্থায় কর্মহীন হয়েও ‘ত্রাণ না পাওয়ার প্রতিবাদ’ করায় প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ দুইজন আহত হয়েছেন।

শনিবার (২ মে) সকালে বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নের গোপালকাঠি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীরা অন্তত ১৩টি বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আহতরা হলেন উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নের গোপালকাঠি গ্রামের শাহ আলম বিপ্লব (৪৮) ও জামিলা বেগম (৬৫)। তাদের মধ্যে শাহ আলম বিপ্লবকে গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর আহত জামিলাকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওই দুজনকে রক্তান্ত জখম অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।

আহত জামিলা বেগমসহ কয়েকজন অভিযোগ করেন, শুক্রবার গোটাপাড়া ইউনিয়নের গোপালকাঠি গ্রামের দরিদ্রদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। আয়োজকরা স্থানীয় যে দরিদ্ররা আগে ত্রাণ পায়নি তাদের না দিয়ে যারা পেয়েছে তাদেরই আবার ত্রাণ বিতরণ করে।

‘এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ত্রাণ না পাওয়া ব্যক্তিরা প্রতিবাদ জানিয়ে বাড়ি চলে আসেন। এর জেরে শনিবার সকালে ২৫/৩০ জনের একদল সশস্ত্র যুবক আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে দুজনকে রক্তাক্ত জখম করে। সে সময় তারা অন্তত ১৩টি বাসতবাড়ি ও দোকানপাটে ভাংচুর ও লুটপাট করে।’

আহত শাহ আলমের ভাগ্নে রুহুল আমিন অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গোপালকাঠি সুইজগেটের কাছে আওয়ামী লীগের অফিসে একটি শালিস বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে আমরা কয়েকজনের বিরুদ্ধে ইভটিজিং ও মাদক সেবনের অভিযোগও করেছিলাম।

‘সবাই শান্তিপূর্ণভাবে থাকবেন বলে সেখানে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তারপর সকালে আব্দুর রহমান ও স্থানীয় ইউপি সদস্য হায়বাতের নেতৃত্বে মাসুম, মোস্তাফিজ, দীপ, মোকাদ্দেসসহ প্রায় ৪০ জন মিলে আমাদের উপর হামলা করে। ঘরবাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুট করে।’

হামলাকারীরা মোবাইলফোন সেট, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুটে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

হামলার অভিয়োগ অস্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য হায়বাত শেখ। তিনি বলেন, ওই এলাকায় দুটি গ্রুপ একটি গ্যাজ্জাম করছিল। সে জের ধরে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাহেব আসছিল শালিস করতে।

‘সেই শালিসে বসাকালিন তারা আবার গ্যাজ্জাম করে। তখন চেয়ারম্যান সাহেব শালিস না করে চলে গেছে। সেই জের ধরে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আমরা আরও আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমরা কেন হামলা করবো?’

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাতাব উদ্দীন বলেন, হামলা ভাঙচুরের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হামলায় নারীসহ দুজন আহত হয়েছেন। একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যজন বাগেরহাট হাসপাতালে আছেন।

এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।

হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অন্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

এসআই/আইএইচ/বিআই/০২ মে, ২০২০

About বাগেরহাট ইনফো নিউজ