প্রচ্ছদ / লেখালেখি / অণুকথা / ভৈরব নদ ও আমার কল্পনা বিলাস

ভৈরব নদ ও আমার কল্পনা বিলাস

আহাদ উদ্দিন হায়দার । বাগেরহাট ইনফো ডটকম

লিনিয়ার পার্ক/ স্ট্রিপ পার্ক/ রিভার ভিউ পার্ক। আধুনিক এসব নামগুলোর আক্ষরিক সংজ্ঞা যাই হোক না কেন, এগুলো সবই পার্ক বা উদ্যান। এখানে মানুষ শান্ত নির্মল পরিচ্ছন্ন পরিবেশ পায়।

পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসে, হাঁটতে অাসে, সময় কাটায়, বিশ্রাম নেয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করে। শরীর ও মন সুস্থ থাকে।

আসুন না, কল্পনা করি! শহরের দড়াটানা সেতু থেকে মুনিগঞ্জ সেতু পর্যন্ত ভৈরব নদের পশ্চিম তীরে বর্তমান সরকার এমনই একটি দৃষ্টিনন্দন, পরিবেশবান্ধব লিনিয়ার পার্ক/ স্ট্রিপ পার্ক/ রিভার ভিউ পার্ক নির্মাণ করে দিয়েছেন।

প্রতিদিন গড়ে দশ হাজারের বেশী বাগেরহাটবাসী বিনামূল্যে সেই পার্কের সুবিধা লাভ করছেন। যাদের মধ্যে অসুস্থ, প্রবীণ ও নারীরা থাকবেন সব থেকে বেশী।

কেমন হতে পারে সেই পার্কের অবয়ব?
পার্ক সংলগ্ন ম্পূর্ণ নদীতীর ব্লক দিয়ে বাধানো, সুরক্ষিত। নদীতে নামার জন্য ঘাটগুলো ব্লক দিয়ে ধাপে ধাপে সিঁড়ি করা। নিরাপত্তার জজন্য এসব সিঁড়ির দুপাশে পাইপের রেলিং।

পার্কের মাঝ বরাবর উত্তর-দক্ষিণে পার্কিং টাইলস বা পাথর দিয়ে তৈরী সরু ৩-৪ ফুট চওড়া ফুটওয়ে বা হাঁটাপথ। সম্পূর্ণ ফুটওয়েটা যদি প্লাস্টিক টিন দিয়ে অাচ্ছাদিত হয় তবে ব্যবহারকারীরা রোদ, বৃষ্টি পাখির বিষ্ঠামুক্ত থাকতে পারেন।

সেই হাটাপথের পূবদিক ঘেসে আট দশ গজ পর পর নদীর দিকে মুখ করা কংক্রিটের টাইলস মোড়া সুদৃশ্য বেঞ্চ বসানো। প্রতিটি বেঞ্চের পাশে একটা ডেকরেটেড ডাস্টবিন।

শিশু, বৃদ্ধ বা প্রতিবন্ধীদের নিরাপত্তার জন্য নদীতীরে প্রোটেকশন ব্লকের ভেতরের দিকে দুই-আড়াই ফুট উঁচু লোহার পাইপের রেলিং। একই ভাবে পার্কের পশ্চিম সীমানাও পাইপ দিয়ে ঘেরা। পুরো পার্কে ছয় থেকে অাটটি পাইপের রিভলভিং প্রবেশ-বাহির পথ থাকতে পারে।

ছায়া ঘেরা পরিবেশ তৈরীর জন্য কিছু উঁচু ছায়া দানকারী গাছ, বিভিন্ন প্রজাতির ছোট এবং মাঝারি ফুলগাছ শৃংখলভাবে লাগানো। ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে পুরো পার্কে তিন চারটি টয়লেট। বিভিন্ন ঝক্কি ঝামেলা এড়াতে কোন স্থায়ী/ অস্থায়ী দোকানপাট না থাকা ভালো।
যান চলাচলেরর সুবিধার্থে ভেড়িবাঁধ সড়কের পূর্বে এবং পার্কের পশ্চিমের মধ্যে ফুট তিনেক ফাঁকা জায়গা।

অাসুন কল্পনা করি, আমরা এ ধরণের একটি পার্কের বেঞ্চে বসে অাছি বা হাটছি, স্বজনদের নিয়ে ঘুরছি। পাখির কলতান, মনোরম বাতাস, সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে মন ভালো হয়ে যাচ্ছে।

এমন একটা কি উচ্চাভিলাসী?
এমন একটা কল্পনার বাস্তবায়ন কী খুবই কঠিন?
একটু নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশ আর বিনোদন সুবিধার জন্য কি অনেক বড় কোন নাগরিক অান্দোলন প্রয়োজন?

আমার বিশ্বাস বাংলাদেশ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন ও বাগেরহাট পৌরসভার সমন্বিত উদ্যোগ অার কোন প্রতিষ্ঠিত প্রকৌশলীর অাঁকা একটি নক্সা এমন একটি কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে।

অার টাকা……..!!!!
জানি না কত টাকা দরকার। তবে সেটা নিশ্চই অতিকায়, বিশাল কিছু না।

তবে এটা বিশ্বাস করি যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে এ ধরণের উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান হবার নজির নেই। শুধু তার কাছে পৌছানোই যা কঠিন ও জটিল।

অার বিশ্বাস করি, স্থানীয় প্রশাসনিক ও সরকারদলীয় রাজনৈতিক পক্ষের সদিচ্ছাই প্রধানমন্ত্রীর ইয়েস কার্ড লাভের জন্য যথেষ্ট।

এইচ/এসআই/বিআই/১৬ এপ্রিল, ২০১৭

About আহাদ হায়দার