প্রচ্ছদ / খবর / আ’লীগ নেতার একান্ত সহযোগী গুলিতে নিহত

আ’লীগ নেতার একান্ত সহযোগী গুলিতে নিহত

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মাসুম সরদার (২৭) নামে এক আ.লীগ নেতার একান্ত সহযোগী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের পালেরখন্ড গ্রামে জিউধরা-মংলা সড়কে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত মাসুম উপজেলার জিউধরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম হাওলাদার ওরফে বাদশা মেম্বরের সহযোগী ছিলেন।

ঘটনার সময় মাসুদ সরদার বাদশাকে নিয়ে মটর সাইকেল চালিয়ে পার্শ্ববর্তি মংলা উপজেলা এলাকা থেকে জিউধরা ইউনিয়নের লক্ষ্মীখালী গ্রামে ফিরছিলেন। তিনি (মাসুম) এই ইউনিয়নের পালেরখ- গ্রামের আব্দুর রশিদ সরদারের ছেলে।

এঘটনায় পুলিশ সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীর আলমের একটি বৈধ দোনলা বন্দুক জব্দ করেছে।

murderমাসুমের ঘাড়ের ডানপাশে গুলি বিদ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে, মাসুম সরদার গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হবার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে দু’ধরণের বক্তব্য পাওয়া গেছে।

জাহাঙ্গীর আলম ওরফে বাদশা হাওলাদারের নিকটজনেরা বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, জাহাঙ্গীর আলম বাদশাকে হত্যা করতে আসা সন্ত্রাসীদের গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে মাসুম নিহত হয়েছেন।

অপর একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম বাদশার কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র থেকে অসাবধানতা বশত গুলি বের হয়ে মাসুমের শরীরে বিদ্ধ হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশও প্রাথমিকভাবে একই ধরণের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে।

এই ঘটনা নিয়ে কথা বলার জন্য জাহাঙ্গীর আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। জাহাঙ্গীর আলমের সাথে থাকা তার ভাইয়ের ছেলে শিমূল হাওলাদার দাবি করেছেন যে, তার চাচাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে ওৎ পেতে তাকা সন্ত্রাসীরা গুলি করেছিলো। কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে চালক মাসুম নিহত হয়েছেন।

তিনি দাবি করেন যে, গুলি বর্ষণকারীরা ছিলো অন্তত তিনজন। ঘটনার পর তারা মটর সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় তার চাচা জাহাঙ্গীর আলম পলায়নপর হত্যা চেষ্টাকারীদের লক্ষ্য করে অন্তত দুই রাউ- গুলি ছুড়েছিলেন।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক সূত্র বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানায়, এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিজ দলে ও দলের বাইরে জাহাঙ্গীর আলমের শক্তিশালী প্রতিপক্ষ আছে। তাই জাহাঙ্গীর আলম সব সময় দলবল বেষ্টিত হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করেন।

বৃহস্পতিবার তিনি তার ভাইয়ের ছেলে শিমূল হাওলাদারসহ ৭-৮ জন সহযোগী নিয়ে তিনটি মটর সাইকেলে পার্শ্ববর্তি মংলা উপজেলা এলাকা থেকে দাওয়াত খেয়ে ফিরছিলেন। জাহাঙ্গীর আলমকে বহনকারী মটরসাইকেলটি চালাচ্ছিলেন নিহত মাসুম। জাহাঙ্গীর নিজের বৈধ দোনলা একটি বন্দুক বহন করছিলেন। ঘটনাস্থলে পৌছালে আকস্মিকভাবে বন্দুক থেকে একটি গুলি বের হয়ে মাসুমের শরীরে বিদ্ধ হলে মাসুম মটর সাইকেল নিয়ে মাটিতে পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

এ সময় পড়ে যেয়ে জাহাঙ্গীর সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। কিছুটা পেছনে থাকা জাহাঙ্গীরের ভাইয়ের ছেলেসহ অন্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে কয়েক রাউ- ফাঁকা গুলি ছোড়েন এবং চেয়ারম্যানকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। তাদের মতে নিজের বন্দুকের গুলি বের হয়ে মাসুমের মৃত্যু হয়েছে। এখন প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হত্যাচেষ্টার কথা বলা হচ্ছে।

এদিকে ঘটনার পর বাগেরহাটের পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্লা, অতিরিক্ত পুরিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান, সহকারী পুলিশ সুপার এনামুল হক মিঠু, মোরেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আসলাম খানসহ মোরেলগঞ্জ থানা ও জিউধরা ক্যাম্পের পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছেন।

মোরেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আসলাম খান ঘটনাস্থল থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধায় বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষ থেকে তাকে হত্যাচেষ্টার কথা বলঅ হচ্ছে। জাহাঙ্গীরকে বলাজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে নিহতের শরীরে গুলির চিহ্ন ও পূর্বাপর পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে আমরা জাহাঙ্গীর আলমের বন্দুক থেকে অসাবধানতা বশত গুলি হতে পারে বলেও সন্দেহ করছি।

বিষয়টি গভীলভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। তাৎক্ষনিক জাহাঙ্গীরের একটি বৈধ দোনলা বন্দুক রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য জব্দ করা হয়েছে।

১৩ নভেম্বর ২০১৪ :: আহাদ হায়দার,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
এস/আই হক-এনআরএডিটর/বিআই

About আহাদ হায়দার