প্রচ্ছদ / খবর / বাগেরহাটে সিভিল সার্জনসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বাগেরহাটে সিভিল সার্জনসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Bagerhat-district-map-Imageঠিকাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে বাগেরহাটের সিভিল সার্জন অরুণ চন্দ্র মণ্ডলসহ তিন চিকিৎসক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে জেলার মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে দু’জন ঠিকাদার ২২ নভেম্বর মোল্লাহাট সহকারী জজ আদালতে মামলাটি করেন।

মামলার অপর দুই বিবাদী হলেন এই দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যসচিব ও মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৈয়দ জাহাঙ্গীর হোসেন এবং মূল্যায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ও মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সত্যজিৎ মণ্ডল। আদালত আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন।

চলতি বছরের ২৫ মে, ১৩ আগস্ট ও সর্বশেষ ২৫ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে তিনবার ওই দরপত্র আহ্বান করা হয়। ১৭ নভেম্বর দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আনোয়ার হোসেনকে ১ ডিসেম্বর ২০১৫ থেকে ৩০ জুন ২০১৬ সাল পর্যন্ত পথ্য সরবরাহের ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

মামলার আরজি থেকে জানা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের জন্য পথ্য সরবরাহ, কাপড় ধোলাই ও স্টেশনারি সামগ্রী সরবরাহের জন্য গত ৯ জুন প্রথম দরপত্র গ্রহণ করা হয়। মামলার বাদী মেসার্স ছাব্বির কনস্ট্রাকশন ও মেসার্স বিশ্বাস কনস্ট্রাকশনের দুই স্বত্বাধিকারী মামলার আরজিতে বলেন, যথাযথভাবে তাঁরাসহ বেশ কয়েকজন ঠিকাদার দরপত্র দাখিল করেন। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই কর্তৃপক্ষ তা বাতিল করে পুনঃ দরপত্র আহ্বান করে।

দ্বিতীয় দফায়ও তাঁরা দরপত্রে অংশ নেন। এবারও দরপত্র বাতিল করা হয়। সর্বশেষ তৃতীয় দফায়ও তাঁরা দরপত্র দাখিল করেন। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ১৫ নভেম্বর বাগেরহাট সিভিল সার্জন কার্যালয়ে মূল্যায়ন কমিটির সভা করে চূড়ান্ত দরদাতার নাম ঘোষণা করবে বলে ঠিকাদারদের জানানো হয়।

কিন্তু ওই দিন ঠিকাদারেরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আসার পর আকস্মিকভাবে সভা স্থগিত করা হয়। ১৭ নভেম্বর কাউকে না জানিয়ে মূল্যায়ন কমিটি শেখ আনোয়ার হোসেনকে পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার নিয়োগ করে। আরজিতে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, অস্বচ্ছতা ও অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়।

সিভিল সার্জন ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি অরুণ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, যথাযথ বিধি অনুসরণ করে পথ্য সরবরাহকারীসহ তিন ধরনের ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। অনিবার্য কারণবশত ১৫ নভেম্বর সভা করা সম্ভব হয়নি। সবাইকে বিষয়টি অবহিত করে ১৭ নভেম্বর দরপত্র নির্বাচন সভা আহ্বান করা হয়। কোনো অস্বচ্ছতা, কারচুপি বা স্বজনপ্রীতি করা হয়নি।

তিন দফা টেন্ডার আহ্বানের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, দাখিলকৃত দরপত্রের শর্ত, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা ও দরপত্রের সাথে সরবরাহ করা বাজার কর্মকর্তার বাজার দরের সাথে সামঞ্জস্য না থাকায় দুই দফা দরপত্র বাতিল করা হয়।

মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং দরপত্র মুল্যায়ণ কমিটির সদস্য সচিব ডা. সৈয়দ জাহাঙ্গীর হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে দরপত্র গ্রহণ ও বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। আসলে একটি মহল আমাদের হয়রানী করার চেষ্টা করছেন।’

বর্তমানে ঐ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পথ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার ইসমাঈল মোল্লা নিজেও এবার পথ্য সরবরাহের দরপত্র দাখিল করেছিলেন জানিয়ে বুধবার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘আমি গত দেড় বছর ধরে পথ্য সরবরাহ করেছি। এবারও পথ্যের দরপত্রে অংশ নিয়েছি, কিন্তু নির্বাচিত হতে পারিনি। আসলে পথ্য সরবরাহে ফাঁকি অনেক। মুনাফাও অনেক। তাই এ নিয়ে এত কথা।’

২৫ নভেম্বর :: আহাদ হায়দার,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
এস/আইএইচ/এনআরএ/বিআই

About আহাদ হায়দার