প্রচ্ছদ / খবর / বাঘের সুরক্ষায় সুন্দরবন রক্ষার আহ্বান

বাঘের সুরক্ষায় সুন্দরবন রক্ষার আহ্বান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম

অষ্টম বারের মতো ‘বিশ্ব বাঘ দিবস’ পালিত হচ্ছে বাংলাদেশে। ঢাকার বাইরে সুন্দরবন সংলগ্ন জেলা বাগেরহাটে এবারই প্রথম কেন্দ্রীয় ভাবে দিবসটি পালন করল বন বিভাগ।

এবারে দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘বাঘ আমাদের গর্ব, বাঘ রক্ষা করব’।

দিবসটি উপলক্ষে শনিবার পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় বাঘ সংরক্ষণে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে বাগেরহাট শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করে। পরে শহরের শালতার জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা কমছে না। পুরো পৃথিবীতে বাঘের সংখ্যা কমছে। বরং এখানে বাঘের সংখা বাড়ছে।

‘কোনো কোনো পত্রিকায় যেসব পরিসংখ্যান দেওয়া হয়, এটা আমাদের পরিসংখ্যান না। বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে এখনো অনেকে স্বীকার করতেই রাজি না। আমাদের এখানে বাঘ সুরক্ষিত আছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বাঘ রক্ষায় জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। বাঘ হত্যা করলে কাউকেই ক্ষমা করা হবে না। আমাদের সুন্দরবনে বাঘ রক্ষার সব প্রকল্প চলত দাতা সংস্থার অর্থায়নে। সুন্দরবনে স্মার্ট প্যাট্রলিংয়ের টাকা দিত ইউএসএআইডি। বলা নাই কওয়া নাই তারা প্যাট্রলিংয়ের অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু আমরা পিছপা হইনি। আমরা এখন নিজের অর্থে এই কাজ করি। বাংলাদেশের মানুষ ইতিমধ্যে সেই সক্ষমতা অর্জন করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সমস্য আমাদেরই মোকাবিলা করতে হবে। মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন হয়েছে। সুন্দরবন এখন সুরক্ষিত আছে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাগেরহাট-৪ আসনের সাংসদ ডা. মোজাম্মেল হোসেন বাঘ হত্যার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, ‘বাঘ বাঁচাতে হলে আমাদের সুন্দরবন বাঁচাতে হবে। বনে যারা বাঘ মারছে বা বিষ দিয়ে মাছ মারছে, তাদের গুলি করে মারা উচিত।’

সুন্দরবনে যারা আগুন দিচ্ছে, তাদের জাতীয় শত্রু উল্লেখ করে তিনি বলেন, রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তাহলে সুন্দরবন বেশি দিন থাকবে না। বন বিভাগের যেসব অসাধু কর্মচারী চোরা শিকারিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, আগামী দিনগুলোতে যেসব এলাকায় বাঘ রয়েছে, সেখানেই জাতীয়ভাবে দিবসটি পালন করা হবে।

সভায় মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ। তিনিসহ সব বক্তাই বাঘ রক্ষায় বাঘের আবাসস্থল সুন্দরবন সুরক্ষিত রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাগেরহাট-২ আসনের সাংসদ মীর শওকত আলী বাদশা, পরিবেশ ও বন-সচিব ইসতিয়াক আহম্মেদ, বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক জাহিদুল কবির, খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক আমির হোসেন, খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ফারুখ হোসেন প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে বাঘ ও সুন্দরবন সংরক্ষণের বার্তা দিয়ে লোকজ সাংস্কৃতিক গান পরিবেশ করা হয়।

২০১০ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে দিবসটি। বাঘ রয়েছে, বিশ্বের এমন ১৩টি দেশ বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ভুটান, নেপাল, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম ও রাশিয়ায় শনিবার দিবসটি পালিত হচ্ছে।

এইচ//এসআই/বিআই/২৯ জুলাই, ২০১৭

About ইনফো ডেস্ক